ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্রুত পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরুর ঘোষণাকে ‘দায়িত্বজ্ঞানহীন’ বলে সমালোচনা করল ইরান। এই পরমাণু অস্ত্র এবং তার পরীক্ষা-নিরীক্ষা নিয়ে সাম্প্রতিক কালে বার বার সরব হতে দেখা গিয়েছে আমেরিকাকে। ইরানের সঙ্গে বিরোধের মূলেই রয়েছে পারমাণবিক শক্তি নিয়ে আস্ফালন! সেই আমেরিকাই এ বার পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করতে চলেছে। তাদের এই সিদ্ধান্তকে কটাক্ষ ইরানের।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচির মতে, যে দেশ বিশ্ব জুড়ে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার বন্ধ করা নিয়ে দাদাগিরি করে, তারাই এখন পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার দিকে ঝুঁকছে! ইরানের শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচি বন্ধ করার জন্য চেষ্টায় থাকা আমেরিকার এ হেন পদক্ষেপ সাজে না বলেই মনে করেন আরাঘচি।
ইরানের বিদেশমন্ত্রী মনে করেন, আমেরিকার এ ধরনের পরীক্ষার ঘোষণা শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়ই নয় , আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে তা বিপজ্জনকও!
বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়া বুসানে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিঙের সঙ্গে বৈঠকের আগে ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করার কথা জানান। তাঁর দাবি, ‘‘আমেরিকার কাছে অন্য যে কোনও দেশের তুলনায় বেশি পরমাণু অস্ত্র রয়েছে। আমার প্রথম মেয়াদেই মজুত অস্ত্রের নবীকরণ এবং তার সংস্কারের মাধ্যমে এই সাফল্য এসেছে।’’ মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, ধ্বংসাত্মক কারণের জন্য তিনি পারমাণবিক অস্ত্রকে ঘৃণা করতেন। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি, তাতে এ ছাড়া তাঁর কাছে কোনও বিকল্প পথ খোলা নেই। হোয়াইট হাউস সূত্রে খবর, আমেরিকার যুদ্ধ দফতরকে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাম্প। তবে কবে থেকে এই পরীক্ষা শুরু হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহেই পরমাণু অস্ত্র বহনে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে রাশিয়া। মস্কোর সেই উৎক্ষেপণের পরই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট তাঁর দেশেও পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষা শুরুর নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন:
দিন কয়েক আগে তেহরানের সঙ্গে বন্ধুত্ব আরও নিবিড় করার ঘোষণা করে মস্কো। অতীতেও বার বার ইরানের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বকে বার্তা দিয়েছে রাশিয়া। ইরানের পরমাণুকেন্দ্রে মার্কিন হামলারও নিন্দা জানিয়েছিল তারা। অন্য দিকে, আমেরিকা চায় ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি সারতে। কিন্তু ট্রাম্পের সেই স্বপ্ন এখনও পূরণ হয়নি। ইরান এ ব্যাপারে স্পষ্ট জানিয়ে রেখেছে, আমেরিকার দাদাগিরির সামনে মাথা নত করবে না ইরান। নিজেদের শর্তে চুক্তি করতে রাজি তেহরান। সেই নিয়ে আমেরিকার সঙ্গে ইরানের সংঘাত চরমে। তার মধ্যেই নিজের দেশের পারমাণবিক অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দেন ট্রাম্প। অনেকের মতে, আমেরিকা যে পারমাণবিক শক্তিধর দেশ, তা রাশিয়া, ইরান এবং চিনকে বোঝাতেই এই কৌশল নিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।