শেখ হাসিনার জমানায় ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা’র কারণে রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি হারিয়েছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামি (‘জামাত’ নামেই যা পরিচিত)। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেরে আওয়ামী লীগের সরকারের পতনের পরে সেই রাজনৈতিক শূন্যস্থান পূরণে অপ্রতিহত গতিতে এগোচ্ছে তারা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরে এ বার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনেও জয় পেল জামাতের ছাত্র সংগঠন ইসলামি ছাত্রশিবির।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৩টি আসনের মধ্যে ২০টিতে জিতেছেন ইসলামি ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থীরা। অধিকাংশ আসনের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার দল বিএনপির ছাত্রশাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সমর্থিত প্রার্থীদের দ্বিগুণেরও বেশি ভোট পেয়েছেন ছাত্রশিবিরের প্রার্থীরা। তবে সহ-সভাপতি এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক পদে জামাতের ছাত্রসংগঠন সমর্থিত প্রার্থীরা জিতলেও ছাত্র সংসদের গুরুত্বপূর্ণ সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী হয়েছেন,‘আধিপত্যবিরোধী ঐক্য’ প্যানেলের সালাউদ্দিন আম্মার। তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন।
আরও পড়ুন:
ইতিহাস বলছে, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় জামাত নেতা-কর্মীরা প্রকাশ্যে পাকিস্তান সেনার পক্ষে কাজ করেছিলেন। রাজাকার, আল বদর ঘাতকবাহিনীর সদস্য হিসাবে গণহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে একাধিক জামাত নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে। হাসিনার জমানায় কয়েক জনের সাজাও হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে। অন্য দিকে, খালেদার স্বামী তথা বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পাক সেনার প্রথম বাঙালি অফিসার হিসাবে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। শেখ মুজিবুর রহমানের মতোই জিয়াও স্বাধীনতার অন্যতম ঘোষক বলে পরিচিত। কিন্তু পালাবদলের বাংলাদেশে মুহাম্দ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার মুক্তিযুদ্দের মূল শক্তি আওয়ামী লীগকে ‘নিষিদ্ধ’ করার পরে ক্রমশই প্রভাব বাড়ছে জামাতের।