চিনের থেকে আরও আর্থিক সাহায্য চাইছে পাকিস্তান। দুই দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের মধ্যে বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঊর্ধ্বসীমা ১০০০ কোটি ইউয়ান বৃদ্ধির আর্জি জানিয়েছে পাকিস্তান। ইসলামাবাদের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিক অস্থিরতার পাশাপাশি সে দেশের অর্থনীতিরও বেহাল অবস্থা। সম্প্রতি আন্তর্জাতিক মুদ্রা ভাণ্ডার বা আইএমএফ পূর্বাভাস দিয়েছে, চলতি বছরে পাকিস্তানের জিডিপি বৃদ্ধির হার ২.৬ শতাংশ কমে যেতে পারে। এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কও উদ্বেগপ্রকাশ করেছে পাকিস্তানের জিডিপি নিয়ে। এই অবস্থায় চিনের সঙ্গে ‘সোয়াপ লাইন’ চুক্তির ঊর্ধ্বসীমা আরও ১০০০ কোটি ইউয়ান বৃদ্ধি করতে চাইছে পাকিস্তান। সংবাদ সংস্থা রয়টার্স শনিবার জানিয়েছে, পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী মুহাম্মদ ঔরঙ্গজ়েব এই বিষয়টি স্বীকার করেছেন।
‘সোয়াপ লাইন’ হল দুই দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কের মধ্যে একটি আর্থিক সমঝোতা। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে উভয় দেশই নিজেদের মধ্যে বিদেশি মুদ্রা বিনিময় করে। মূলত বিদেশি মুদ্রার ভাণ্ডার ঠিকঠাক রাখতে এবং আঞ্চলিক ব্যাঙ্কগুলিতে নগদ সঙ্কট এড়াতে এই আর্থিক সমঝোতা করা হয়। চিনের সঙ্গে পাকিস্তানের আগে থেকেই ৩০০০ কোটি ইউয়ানের একটি ‘সোয়াপ লাইন’ রয়েছে। এই অবস্থায় চিনের সঙ্গে আর্থিক চুক্তির ঊর্ধ্বসীমা আরও ১০০০ কোটি ইউয়ান বৃদ্ধির অনুরোধ জানিয়েছে পাকিস্তান।
বস্তুত, পাকিস্তানের এই অনুরোধ নতুন কিছু নয়। গত বছরের অক্টোবরেও বেজিংয়ের কাছে একই অনুরোধ করেছিল ইসলামাবাদ। ওই সময় ওয়াশিংটনে বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং আইএমএফ-এর বার্ষিক সম্মেলনের পার্শ্ববৈঠকে চিনা উপঅর্থমন্ত্রী লিয়াও মিনের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন ঔরঙ্গজ়েব। তখনও ‘সোয়াপ লাইন’ চুক্তির ঊর্ধ্বসীমাকে ৩০০০ কোটি ইউয়ান থেকে বৃদ্ধি করে ৪০০০ কোটি ইউয়ান করার অনুরোধ করেছিলেন পাক অর্থমন্ত্রী। তবে পাকিস্তানের অনুরোধে চিনের তরফে ইতিবাচক কোনও পদক্ষেপের কথা এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে আসেনি।
আরও পড়ুন:
কয়েক দিন আগেই কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ২৬ জন নিরস্ত্রকে হত্যা করেছে জঙ্গিরা। একটি গোয়েন্দা রিপোর্টে দাবি করা হচ্ছে, ওই ঘটনায় জড়িত বেশির ভাগ জঙ্গিই পাকিস্তান থেকে এসেছিল। এই পরিস্থিতিতে ভারত-পাকিস্তান কূটনৈতিক সম্পর্ক আরও তলানিতে ঠেকেছে। দু’পক্ষই একে অন্যের বিরুদ্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ করেছে। সিন্ধুচুক্তি স্থগিত করে দিয়েছে ভারত। অন্য দিকে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধের কথা ঘোষণা করেছে পাকিস্তান। যদিও নয়াদিল্লির সঙ্গে উত্তেজনার পরিস্থিতি পাকিস্তানের অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলবে না বলেই দাবি পাক অর্থমন্ত্রীর। তাঁর দাবি, চলতি বছরের জুনে পাকিস্তানে যে অর্থবর্ষ শেষ হবে তাতে ৩ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধি দেখা যাবে। পরবর্তী কয়েক বছরে তা আরও কিছুটা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা ঔরঙ্গজ়েবের।