Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Anti CAA Movement

সিএএ নিয়ে বইমেলার অশান্তি আঁচ ছড়াল বিধাননগর থেকে যাদবপুর

এ দিন পুলিশের ভূমিকায় সরব হয়েছেন মেলায় উপস্থিত বহু মানুষ। কেন নির্দোষ ব্যক্তিদের আটক করে রাখা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানান সমাজকর্মীরা।

বইমেলার অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সামনে প্রতিবাদীরা জড় হন। ছবি:নিজস্ব চিত্র

বইমেলার অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সামনে প্রতিবাদীরা জড় হন। ছবি:নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ২০:১৪
Share: Save:

বইমেলার অশান্তি এ বার বিধাননগর থেকে ছাড়িয়ে পৌঁছল যাদবপুরে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (এনআরসি) এবং জাতীয় জনসংখ্যা পঞ্জি (এনপিআর) নিয়ে প্রচার মিছিলে হামলার প্রেক্ষিতে শনিবার বইমেলায় ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিজেপি এবং পুলিশের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ ওঠে আন্দোলনকারীদের উপরে। এ অভিযোগের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজনও। এ বার সেই অশান্তির আঁচ পৌঁছল বিধাননগর উত্তর থানা পর্যন্ত। রাতে এ নিয়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে যাদবপুরেও।

পুলিশের অভিযোগ, বিধাননগর উত্তর থানায় আন্দোলনকারীদের আটকে রাখা হয়েছে, ওই অভিযোগে থানার চড়াও হন ছাত্রছাত্রীরা। তাদের আরও অভিযোগ, পুলিশকর্মীদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। এমনকি, মহিলা পুলিশকর্মীদেরও চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয়েছে। এ নিয়ে রাতে নতুন করে পরিস্থিত আরও ঘোরাল হয়ে উঠেছে। বিধাননগর ছাড়াও তা নিয়ে যাদবপুর থানার সামনে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ। সেখানকার রাস্তা ঘেরাও করে বিক্ষোভে শামিল হয়েছেন বহু ছাত্রছাত্রী।

সিএএ, এনআরসি এবং এনপিআর-এর প্রতিবাদে অন্যান্য দিনের মতোই বইমেলায় ঘুরে প্রচার করছিলেন একদল পড়ুয়া। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ। ছিলেন মানবাধিকার কর্মীরাও। এ দিন আচমকাই ওই প্রচার চলাকালীন ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয় বইমেলায়। অভিযোগ, সিএএ-এনআরসি প্রচারের সময় আচমকাই এক দল যুবক হামলা করে। হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। ঘটনাস্থলে পুলিশ এলে উল্টে প্রচারকারীদের মারধর করে বলে অভিযোগ।

এর পর বইমেলার অস্থায়ী পুলিশ কন্ট্রোল রুমের সামনে প্রতিবাদীরা জড় হন। সেই সময় পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েন ছাত্রছাত্রী এবং মানবাধিকার কর্মীরা। তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ কোনওকথাই শুনতে চায়নি। উল্টে তাঁদের বেশ কয়েকজনকে আটকে রাখে। তাঁদের অভিযোগ, হামলাকারীরা সকলেই বিজেপির কর্মী-সমর্থক। তাঁদেরই আড়াল করার চেষ্টা করছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: সাতসকালে রিকশা চালিয়ে কোথায় গেলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম

এ দিন পুলিশের ভূমিকায় সরব হয়েছেন মেলায় উপস্থিত বহু মানুষ। কেন নির্দোষ ব্যক্তিদের আটক করে রাখা হয়েছে তার প্রতিবাদ জানান সমাজকর্মীরা। এপিডিআর-এর সদস্য মানবাধিকার কর্মী রঞ্জিত সূর বলেন, ‘‘বিষয়টি খতিয়ে না দেখেই পুলিশ এক পক্ষের উপর হামলা চালিয়েছে। লাঠিচার্জ করেছে। এমনকি আমাকেও ধাক্কা দিয়েছে। এই ঘটনায় অনেকেই আহত হয়েছেন। এর প্রতিবাদে আমরা গিল্ড কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি। কেন পুলিশ বিজেপিকে আড়াল করতে চাইছেন তার জবাব চাই।’’

আরও পড়ুন:স্বামী-স্ত্রীর ‘ফ্রেন্ডশিপ ক্লাব’! শহরে ৭দিন ঘাঁটি গেড়ে মুম্বই পুলিশ, জালে অভিযুক্ত

বইমেলায় উপস্থিত প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রতিবাদ চলাকালীন ‘জনবার্তা’ নামের একটিস্টল থেকেবেশ কয়েক জন বিজেপি কর্মী-সমর্থক বেরিয়ে আসেন। তাঁরাই হামলা চালান। এক মহিলা আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি বলে জানান মানবাধিকারকর্মী আলতাফ আহমেদ। তাঁর কথায়: ‘‘বিধাননগর থানার পুলিশ বইমেলার কন্ট্রোলরুমে আলোচনার নামে ডেকে মারধর করে দফায় দফায় গায়ে হাত তোলে।’’ বিজেপির তরফে জানানো হয়েছে, বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে প্রচারের নাম করে ওই মানবাধিকার কর্মীরাই তাদের কর্মীদেরউপর হামলা চালিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE