প্রতীকী ছবি।
করোনা আবহে হাইকোর্টের নির্দেশে সমস্ত বাজি পোড়ানো এ বারে নিষিদ্ধ। তবু গোপনে বাজি বিক্রির কারবার নিয়ে ছড়াচ্ছে উদ্বেগ।
মালদহ
রবিবার দুপুর ১টা। রথবাড়ি নেতাজি কমার্শিয়াল মার্কেট কমপ্লেক্সের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ। কিন্তু সেই মার্কেটেই, নেতাজি পুরবাজার ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ে যাওয়ার রাস্তার বাঁ দিকে সামনের শাটার বন্ধ রেখে পাশের শাটার খুলে একটি দোকানে দেদার বাজি বিক্রি করতে দেখা গেল। কালো রঙের প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগে বাজি ভরে বাজি নিয়ে গেলেন অনেকেই। গ্রাম থেকেও অনেকে এসে নিয়ে গেলেন বাজি। নিষেধ সত্ত্বেও বাজি বিক্রি নিয়ে মন্তব্য করেননি বিক্রেতা। ক্রেতাদেরও মুখে কুলুপ।
আবার কমার্শিয়াল মার্কেটেরই উল্টো দিকে রাস্তার পাশে এক বাজির দোকানিকে দেখা গেল বন্ধ দোকানের সামনে টেবিল পেতে মোম নিয়ে বসে থাকতে। এ দিন প্রকাশ্যে বাজি বিক্রি হলেও পুলিশি নজরদারি ছিল না বলে অভিযোগ। অভিযোগ, চিত্তরঞ্জন মার্কেট ও অন্য বাজারেও পানের দোকানে, স্টেশনারি দোকানে গোপনে বিক্রি হচ্ছে বাজি। গোপনে বাজি বিক্রি কী ভাবে বন্ধ হবে তা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। পুলিশ অবশ্য জানিয়েছে, বাজি বিক্রি বন্ধে জোর নজরদারি চলছে।
মালদহ মেডিক্যালের মেডিসিন বিভাগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পীযূষকান্তি মণ্ডল বলেন, ‘‘বাজির ধোঁয়ায় করোনা রোগীদের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা নেমে যেতে পারে। তাতে বিপদ প্রচণ্ড বেড়ে যাবে। এ ছাড়া যাঁরা সুস্থ হয়েছেন তাঁদের ফুসফুসে ক্ষতি হয়ে থাকে, বাজির ধোঁয়া তাঁদের শ্বাসকষ্ট বাড়িয়ে দিতে পারে। ফের হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে। ফলে এ বার বাজির ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করতেই হবে।’’ পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘বাজারে নজরদারি চলছে। গোপনে বাজি বিক্রি বরদাস্ত করা হবে না। ধরতে পারলে আইনি পদক্ষেপ হবে।’’
রায়গঞ্জ
রায়গঞ্জের সুদর্শনপুর এলাকার রায়গঞ্জ-বালুরঘাট রাজ্য সড়কের ধারে একটি নামী স্টেশনারি দোকানে রবিবার দুপুর তিনটে নাগাদ দুই ব্যক্তি গিয়ে মালিককে বললেন, “দাদা কিছু তারাবাতি, চরকি, রকেট, ফুলঝুড়ি হবে নাকি?” প্রশ্ন শুনে দোকানের মালিক পাল্টা প্রশ্ন করলেন, “আমি প্রতি বছর বাজি বিক্রি করি, তা সবাই জানে। আপনারা সাদা পোশাকের পুলিশ নন তো?”
ওই দুই যুবকের জবাব, “কী যে বলেন। প্রতি বছর দীপাবলির আগে আপনার দোকান থেকেই তো কিনি।”
এর পরে ওই দুই যুবকের কাছ থেকে চিরকুটে বাজির পরিমাণ লিখে নিয়ে দোকান থেকে বার হয়ে গেলেন তিনি। কিছু ক্ষণ পর সাদা প্লাস্টিকের প্যাকেট নিয়ে ফিরে যুবকদের হাতে তুলে দিলেন। দামবাবদ নিলেন প্রায় দু’হাজার টাকা।
নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও শহরে বিভিন্ন ব্যবসার আড়ালে গোপনে আতশবাজি ও শব্দবাজি বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ব্যবসায়ীরা গ্রেফতারি এড়াতে কেউ দোকানে আতশবাজি ও শব্দবাজি মজুত রাখছেন না। আইসি সুরজ থাপা অবশ্য জানান, অভিযান চলছে। রায়গঞ্জ মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক অতনুবন্ধু লাহিড়ী বলেন, “আইন আইনের পথে চলুক।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy