Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Gorkhaland

পাহাড় বৈঠকে না রাজ্যের

সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে বিমল গুরুং শিবির। গুরুংকে সামনে রেখে গত দু’দিন ধরে তাঁরা নতুন করে আশার আলো দেখা শুরু করেছিল।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০২০ ০২:৫৩
Share: Save:

বিজেপি বাংলা ভাগের চক্রান্ত করছে— পাহাড় প্রসঙ্গে এ বার এই মর্মে কেন্দ্রের শাসকদলকে আক্রমণ করল তৃণমূল। মঙ্গলবার পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব থেকে শুরু করে দলের জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার— সকলেই অভিযোগ করেন, ভোটের মরসুম আসতেই পাহাড়বাসীর আবেগ নিয়ে খেলা শুরু করছে বিজেপি। স্থানীয় বিজেপি সাংসদকে অনাবাসী বলে তাঁদের অভিযোগ, উনি এলাকায় ফ্লেক্স ঝুলিয়ে নিজের প্রচার করেন আর দিল্লিতে বসে চলছে বাংলা ভাগের চক্রান্ত করেন। আজ, বুধবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের ডাকা বৈঠক। সেখানে রাজ্যের তরফে কেউ যাচ্ছে না বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

গৌতমবাবুর অভিযোগ, ‘‘রাজ্যকে বাদ দিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা চলছে। রাজ্যের কেউ এই বৈঠকে যোগ দিতে যাবে না। আর বাংলার ভূখণ্ডকে এক ইঞ্চি ভাগ করার চেষ্টা হলেই আমরা মানুষকে নিয়ে তা প্রতিহত করব।’’ রঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘২০০৯ সাল থেকে এই খেলা চলছে। পাহাড়ের মানুষকে উস্কে নিজেদের রাজনৈতির ফায়দা তোলা হচ্ছে। একটা দল রাজ্যকে ভেঙে দিতে চাইছে। এর বিরুদ্ধে সবাই সরব না হলেও আগামীতে তো এরা বাংলার ইতিহাস, সংস্কৃতি, কৃষ্টি সব মুছে ফেলবে।’’ সাংসদ রাজু বিস্তা পাল্টা বলেছেন, ‘‘আমরা তৃণমূলের মতো রাজনীতি করি না। দলের সংকল্পপত্রে পাহাড় সমস্যার স্থায়ী রাজনৈতিক সমাধানের কথা বলা হয়েছিল। সেই লক্ষ্যেই কেন্দ্র কাজ করছে।’’

আগামী বছর রাজ্যের বিধানসভা ভোট। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে উত্তরবঙ্গের ৭টি আসনেই জিতেছে বিজেপি। বিধানসভার ৫৪টি আসনের মধ্যে ৩৮টিতেই এগিয়ে ছিল তারা। তার মধ্যে রয়েছে দার্জিলিং লোকসভা আসনও। তাতে সমতলের চারটি ছাড়াও পাহাড়ের তিন আসন রয়েছে। গত এক বছর ধরে রাজু বিস্তা পাহাড় সম্পর্কে কয়েক বার সংসদে বিবৃতি রাখা এবং কয়েকটি স্মারকলিপি দেওয়া ছাড়া বড় কোনও পদক্ষেপের ব্যাপারে জোর দেননি, দাবি তৃণমূলের। এই পরিস্থিতিতে আজ, বুধবার পাহাড় নিয়ে বৈঠক ডেকেছে কেন্দ্র। প্রথমে তাতে ‘গোর্খাল্যান্ড’ শব্দ নিয়ে বিতর্ক দেখা দেয়। পরে সেটি সংশোধন করে জিটিএ করা হয়। এ দিন কেন্দ্র মেনে নেয়, ভুল করে গোর্খাল্যান্ড লেখা হয়েছিল। তবে গত ২৭ জুলাইয়ের মতো এবারেও জিটিএ নিয়ে বৈঠক ডাকায় বিজেপি ঘেঁষা জিএনএলএফ, বিমল গুরুংপন্থী মোর্চার অস্বস্তি বেড়েছে। জিএনএলএফ নেতা প্রথমে বৈঠককে স্বাগত জানালেও এখন তাঁর মুখ বন্ধ।

সবচেয়ে বেশি অস্বস্তিতে বিমল গুরুং শিবির। গুরুংকে সামনে রেখে গত দু’দিন ধরে তাঁরা নতুন করে আশার আলো দেখা শুরু করেছিল। গুরুংয়ের নেতৃত্বে একজোট করার চেষ্টাও হয়। কিন্তু কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত বদলে যাওয়ায় তারা এখন বাংলার বিজেপিকে দুষছে। আর রোশন গিরিরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে গিয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতা করার কথা বলছেন। তাঁরা জানান, জিটিএ নিয়ে বৈঠক অর্থহীন। বিজেপির এমন

কাণ্ডে পাহাডবাসীর মনে চোট লেগেছে। এর বিরোধিতা করতেই হবে। জিটিএ নিয়ে বৈঠকের কোনও মানেই হয় না।উল্টো দিকে, অনীত থাপা শুধু বলেছেন, ‘‘পাহাড়বাসীর আবেগ গোর্খাল্যান্ড। রাজনৈতিক দলগুলি ক্ষমতায় বসে তা শেষ করছে। আমাদের অরাজনৈতিকভাবে এই দাবিটা তুলতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bimal Gurung Gorkhaland Darjeeling
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE