জ্যোতিষশাস্ত্র মতে আমাদের জীবনে বিভিন্ন ক্ষেত্রের সঙ্গে গ্রহ-নক্ষত্রের পারস্পরিক সম্পর্ক রয়েছে। আমাদের প্রেম জীবন, ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পেশাগত জীবন, অর্থভাগ্য, সমস্ত কিছু নির্ভর করে বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থানের উপর। অন্যদিকে, কোন গ্রহ আমাদের কেমন ফল দেবে, তা আবার নির্ভর করে আমাদেরই কার্যকলাপের উপর। প্রাত্যহিক জীবনে আমাদের বিভিন্ন কৃতকর্মের ফলে বহু গ্রহের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। বিশেষ করে নানা বদভ্যাসের প্রভাব গ্রহের উপর অতিরিক্ত মাত্রায় পড়ে বলে মনে করছে শাস্ত্র। আমাদের শুভ ফল দানে ব্যর্থ হয় গ্রহ।
আরও পড়ুন:
কোন অভ্যাসের ফলে কোন গ্রহের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়?
রবি: আমাদের আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধিতে সাহায্য করে রবি। এর ফলে আমরা সাহসে ভর করে কোনও কাজের জন্য এগিয়ে যেতে পারি। অতিরিক্ত আত্মঅহংকারের প্রভাবে রবির কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। আমাদের আত্মবিশ্বাসও ক্ষুণ্ণ হয়।
চন্দ্র: মন হাসিখুশি রাখতে, মন শান্ত করতে সাহায্য করে চন্দ্র। যে ব্যক্তি পরিবারকে বিশেষ সময় দেন না, নিজেকে সময় দেন না তাঁদের কোষ্ঠীতে চন্দ্রের স্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে জীবন থেকে আনন্দ মুছে যায়।
মঙ্গল: কোনও কাজের প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে, মনের একাগ্রতা বাড়াতে সাহায্য করে মঙ্গল। মঙ্গলের সুপ্রভাবে আমাদের শক্তি এবং সাহসও বৃদ্ধি পায়। কিন্তু হঠকারী হয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া, অতিরিক্ত রেগে যাওয়া, ধৈর্য হারিয়ে ফেলার কারণে মঙ্গলের ক্ষমতা হ্রাস পায়। তখন আমরা কোনও কাজে সাফল্য অর্জন করতে ব্যর্থ হই।
আরও পড়ুন:
বুধ: বুধ আমাদের বাচনভঙ্গি উন্নত করতে সাহায্য করে। একই সঙ্গে আমাদের বুদ্ধির গোড়াতেও শান দেয় এই গ্রহ। পরনিন্দা করলে অথবা অসত্যের পথে হাঁটলে বুধের সুফল দানের ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে কোথায় কী ধরনের কথা বলা উচিত তা ঠাহর করে উঠতে পারি না। সে কারণে নানা মুশকিলেও পড়তে হয় আমাদের।
বৃহস্পতি: আমাদের সাধারণ জ্ঞান এবং আধ্যাত্মিক চেতনার চাবিকাঠি রয়েছে বৃহস্পতির হাতে। অতিরিক্ত পার্থিব চাহিদা এবং তার প্রতি লোভ বৃহস্পতির সুফলকে কুফলে পরিণত করে দেয়। এর ফলে আমাদের লোভ কোনও বাধা মানে না। মনের শান্তিরও ব্যাঘাত ঘটে।
শুক্র: সৌন্দর্য এবং ভালবাসার গ্রহ হল শুক্র। পরিবেশের ক্ষতি করা, কোনও সম্পর্কে থেকেও তা কদর না করার ফলে শুক্রের কার্যক্ষমতা হ্রাসপ্রাপ্ত হয়। এর ফলে জীবন থেকে ভালবাসা মুছে যায়।
আরও পড়ুন:
শনি: শনি হল কর্মফলদাতা গ্রহ। আমরা যেমন কাজ করব, শনি সেই অনুযায়ী আমাদের ফলপ্রদান করবে। অতিরিক্ত কুঁড়েমি, কাজের প্রতি অনীহা দেখালে শনির কুফল দানের মাত্রা বৃদ্ধি পায়।
রাহু: রাহু যদি কোনও ব্যক্তির কর্মে খুশি হয়, তা হলে উক্ত ব্যক্তিকে সমস্ত সুখ দিয়ে ভরিয়ে রাখে। কিন্তু নেশা, অপকর্ম, বেআইনি কাজ করলে রাহুর সুফল দানের ক্ষমতা হ্রাস পায়। এর ফলে জীবন থেকে সমস্ত সুখ উধাও হয়ে যায়।
কেতু: আধ্যাত্মিক জ্ঞান বিকাশে সাহায্য করে কেতু। ছন্নছাড়া জীবনধারা বজায় রাখলে, ভগবানের প্রতি অশ্রদ্ধা দেখালে কেতুর ফলদানের ক্ষমতা হ্রাস পায়। তখন কেতুর কোপের মুখে পড়ে সব কিছু হারাতে হয়।