পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের পরে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার পারদ ক্রমশ চড়ছে। তার প্রভাব পড়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা (এলওসি)-তেও। বিনা প্ররোচনায় সংঘর্ষবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করে গত ছ’দিন ধরে লাগাতার গোলাগুলি ছুড়ছে পাকিস্তান সেনা ও রেঞ্জার্স বাহিনী। ফলে ত্রস্ত এলওসি লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দারা।
পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে ওই গ্রামবাসীদের নিরপত্তার জন্য পুরনো ‘কমিউনিটি বাঙ্কার’গুলি মেরামতের কাজ শুরু হয়েছে। সেই সঙ্গে পাক হামলা থেকে আত্মরক্ষার জন্য ওই গ্রামগুলির স্কুলপড়ুয়াদের দেওয়া হচ্ছে বিশেষ প্রশিক্ষণ! জম্মু ও কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার সরকার চলতি সপ্তাহ থেকে এলএসি লাগোয়া প্রতিটি গ্রামের স্কুলগুলিতে শুরু করেছে ‘সেফটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম’। আয়োজনে তাঁর সরকারের শিক্ষা দফতর।
২২ এপ্রিলের পহেলগাঁও সন্ত্রাসের পর থেকে নিয়ন্ত্রণরেখায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার পর্যন্ত টানা ছ’দিন সংঘর্ষবিরতি ভেঙে গুলি চালিয়েছে পাক ফৌজ। এলওসি এলাকায় সংঘর্ষবিরতি কার্যকর করতে ২০০৩ সালে একমত হয়েছিল নয়াদিল্লি-ইসলামাবাদ। ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ভারত ও পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতি চুক্তি পুনর্নবীকরণ করেছিল। খাতায়কলমে এই নিয়ম এখনও বহাল। কিন্তু, অতীতেও অশান্ত পরিস্থিতিতে লঙ্ঘিত হয়েছে সেই সমঝোতা। এ বারও তাই হয়েছে।
অতীতে দেখা গিয়েছে প্রাথমিক ভাবে পাক ফৌজ স্বয়ংক্রিয় রাইফেল বা হালকা মেশিনগান ব্যবহার করলেও পরবর্তী পর্যায়ে মাঝারি ও ভারী মেশিনগান এবং মর্টার হামলা চালায়। আর সেই ‘ক্যালিবার কনভার্সন’-এর ফলে সাধারণ নাগরিকদের হতাহত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। সম্ভাব্য সেই পরিস্থিতির মোকাবিলার উদ্দেশ্যে স্কুলপড়ুয়াদের হামলা থেকে বাঁচার প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে বলে ওমর সরকারের দাবি। এক শিক্ষা আধিকারিক জানিয়েছেন, এলওসি থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে অবস্থিত তুলাওয়ারি স্কুল অতীতেও পাক মর্টার সেলের নিশানা হয়েছে। পড়ুয়া ও শিক্ষকদের সুরক্ষার উদ্দেশ্যে তাই নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের পাশাপাশি গোলাগুলি এড়াতে ‘করণীয়’ সম্পর্কে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।