Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

একরত্তি ‘প্যাকেজিংয়ে’ দিশাহারা বিশ্ব

সাধারণ ভাবে নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগোর ছায়ায় থাকা ডেট্রয়েট আজ আমেরিকার সব খবরের চ্যানেলের শিরোনামে, কারণ ডেট্রয়েট হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস ‘হটস্পট’।

স্তব্ধ ডেট্রয়েট।—ছবি এএফপি

স্তব্ধ ডেট্রয়েট।—ছবি এএফপি

সুমিত বন্দ্যোপাধ্যায়
ডেট্রয়েট (আমেরিকা) শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০২০ ০৪:০৭
Share: Save:

করোনাভাইরাস। নামটা প্রথম শুনেছিলাম ভাইরোলজির ক্লাসে বসে। ভাইরাসদের বিশ্বে আছে নানা সদস্য। তাদের গঠন ও জীবনযাত্রাও নানাবিধ। মামুলি বিষফোঁড়া থেকে প্রাণঘাতী ক্যানসার, কে নেই সেই ভাইরাস বিশ্বে! এই বৈচিত্রপূর্ণ পরিমণ্ডলে করোনা এক জন সাধারণ সদস্য, এত দিন তার পরিচিতি ছিল সাধারণ সর্দিজ্বরের কারণ হিসেবেই। তাই বিভিন্ন ভাইরোলজি ল্যাবে করোনা নিয়ে কাজ হলেও তা থেকে আশু বিপদের আশঙ্কা কেউই আঁচ করতে পারেননি। করোনা কিন্তু ভুল প্রমাণিত করেছে বিশেষজ্ঞদের। আরএনএ এবং তার ওপর প্রোটিনের মোড়কের ওই একরত্তি ‘প্যাকেজিং’-এর সামনে আজ দিশাহারা বিশ্বের তাবড় দেশ।

মিশিগানের সব থেকে বড় শহর ‘মোটরসিটি’ ডেট্রয়েট। সাধারণ ভাবে নিউ ইয়র্ক, লস অ্যাঞ্জেলেস, শিকাগোর ছায়ায় থাকা ডেট্রয়েট আজ আমেরিকার সব খবরের চ্যানেলের শিরোনামে, কারণ ডেট্রয়েট হয়ে উঠেছে করোনাভাইরাস ‘হটস্পট’। সংক্রমণ সংখ্যার বিচারে আমেরিকায় মিশিগানের অবস্থান তৃতীয়, নিউ ইয়র্ক ও নিউ জার্সির ঠিক পরেই।

মিশিগানের গভর্নর গ্রেচেন হুইটমার করোনা নিয়ন্ত্রণ করতে মার্চের মাঝামাঝি স্কুল, কলেজ, রেস্তরাঁ, বার বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরেও আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বাড়তে থাকায় ২৩ মার্চ ‘স্টে-অ্যাট-হোম’ অর্ডার জারি করেন, যার অর্থ জরুরি কাজ বা পরিষেবা দেওয়ার জন্য শুধু বাড়ি থেকে বেরোনো যাবে। এই নির্দেশ অমান্য করলে তিন মাসের জেল বা এক হাজার ডলার জরিমানা হবে। এত কিছু করেও কিছু অত্যুৎসাহীর অকারণে বাইরে বেরোনো বন্ধ হয়নি। তাই নিয়ম আরও কঠোর করা হয়েছে, আক্রান্তের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেতে পারে এই আশঙ্কায় ডেট্রয়েটের বিশাল কনভেনশন সেন্টারকে অস্থায়ী হাসপাতালে রূপান্তরিত করা হয়েছে। গভর্নর গৃহবন্দি থাকার মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০শে এপ্রিল পর্যন্ত করেছেন।

আরও পড়ুন: ভেন্টিলেটর নেই, অক্সিজেন মাস্ক অপ্রতুল, নেই জল, সাবানও, আফ্রিকা রয়ে‌ছে আফ্রিকাতেই!

ডেট্রয়েটের মানুষ নিজেদের আর্থসামাজিক স্তর অনুযায়ী নানা চিন্তায় ভুগছেন। সচ্ছল মানুষের চিন্তা, আবার কবে যাওয়া যাবে মোটরসিটি ক্যাসিনো বা ফক্স থিয়েটারে। গরিব মানুষের চিন্তা, আবার কবে কাজে যেতে পারবেন, কবে ‘আনএমপ্লয়মেন্ট বেনিফিট’ আসবে, সংসারের ন্যূনতম খরচ চালানোর ব্যবস্থাই বা কী ভাবে হবে। ঘরবন্দি থাকার জন্য সব থেকে বেশি সমস্যায় এঁরাই। আমরা যারা গবেষণাগারে কাজ করি, তারা দিন গুনছি আবার কবে ল্যাবে যাওয়া যাবে। আমার মতো ভাইরোলজির প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের কাছে ভাইরাসের আকর্ষণ অনস্বীকার্য। তবে অবশ্যই সেই আকর্ষণ ল্যাবের পরিসরে সীমিত।

(লেখক ভাইরোলজির গবেষক)

আরও পড়ুন: ‘ইচ্ছাকৃত হলে ফল ভুগতে হবে’, চিনকে হুমকি আমেরিকার

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus USA Detroit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE