Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
International News

সন্ত্রাস দমনে ব্যবস্থা নেয়নি পাকিস্তান, রিপোর্ট এফএটিএফ-এর, থাকতে পারে ধূসর তালিকাতেই

জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম), জামাত-উদ-দাওয়া (জেইউডি), লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি)-র মতো জঙ্গি সংগঠন বা হাফিজ সইদের মতো রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষিত বিশ্ব-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও পাকিস্তান কোনও দমনমূলক ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ।

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষণ।

রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের ভাষণ।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৯ ১৪:৫৬
Share: Save:

সন্ত্রাস দমনে তো বটেই, বারবার হুঁশিয়ারির পরও রাষ্ট্রপুঞ্জের চিহ্নিত আন্তর্জাতিক জঙ্গিদের বিরুদ্ধে কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি পাকিস্তান। এমনটাই জানাল বিশ্ব সন্ত্রাসে অর্থ যোগানের উপর নজরদারি চালানো আন্তর্জাতিক সংস্থা ফাইনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স বা এফএটিএফ। সংবাদ সংস্থা সূত্রে খবর, এফএটিএফ-এর ৪০টি নির্দেশিকার মধ্যে ৯টির ক্ষেত্রে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে ইমরান খানের সরকার। ফলে আগামী বৈঠকেও ধূসর তালিকা থেকে পাকিস্তানের বেরনোর সম্ভাবনা ক্ষীণ বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।

জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম), জামাত-উদ-দাওয়া (জেইউডি), লস্কর-ই-তৈবা (এলইটি)-র মতো জঙ্গি সংগঠন বা হাফিজ সইদের মতো রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষিত বিশ্ব-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে বারবার সতর্ক করা সত্ত্বেও পাকিস্তান কোনও দমনমূলক ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। উল্টে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে রয়েছে সন্ত্রাসীদের মদত ও প্রশ্রয় দেওয়া এবং অর্থ জোগানোর অভিযোগ। সেই কারণেই গত বছরের জুনে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকাভুক্ত করে দেয় এফএটিএফ। সময়সীমা দেওয়া হয় এ বছরের অক্টোবর পর্যন্ত। ওই সময় স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা মেনে ব্যবস্থা না নিলে কালো তালিকাভুক্ত করা হতে পারে ইসলামাবাদকে। কিন্তু তার পরও যে ইমরান সরকারের হুঁশ ফেরেনি, ফের তা স্পষ্ট হল।

পাকিস্তানকে ধূসর তালিকায় রাখা হবে কিনা, তা নিয়ে আগামী সপ্তাহে এফএটিফ বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। তার আগে শনিবারই প্রকাশিত হয়েছে এফএটিএফ-এর রিপোর্ট। সেই রিপোর্টে উঠে এসেছে, মাত্র ৯টি নির্দেশিকা বা অভিযোগের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে ইসলামবাদ। ২৬টির ক্ষেত্রে অল্পবিস্তর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, বাকি চারটিতে কোনও পদক্ষেপই করা হয়নি। মাত্র একটির ক্ষেত্রে নির্দেশিকা মেনে পুরোপুরি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংবাদ সংস্থা পিটিআই-এর দাবি, অক্টোবরের ১৩ থেকে ১৮ তারিখ পর্যন্ত এফএটিএফ-এর প্লেনারি সেশনে পাকিস্তানকে ধূসর তালিকায় রাখার সম্ভাবনা প্রবল।

আরও পড়ুন: ২১ অক্টোবর পর্যন্ত আর একটিও গাছ কাটা যাবে না, অ্যারে নিয়ে স্থগিতাদেশ সুপ্রিম কোর্টের

এফএটিএফ-এর রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের ১২৬৭ নম্বর ধারায় তালিকাভুক্ত বিশেষ করে লস্কর-ই-তৈবা, জামাত-উদ-দাওয়া, ফালাহ-ই-ইনসানিয়াতের মতো সংগঠন বা তাদের মাথার বিরুদ্ধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি পাকিস্তান। পাকিস্তানের উচিত সন্ত্রাসে অর্থ জোগান বা আর্থিক সংস্থান কী ভাবে হয়, তা উপযুক্ত ভাবে চিহ্নিত ও পর্যালোচনা করা। আল কায়দা, দায়েশ, জেইউডি, এলইটি, জেইএম— এর মতো সংগঠনের ঝুঁকি ও বিপদ সম্পর্কে পর্যালোচনা করে এদের অর্থ জোগানের পাইপলাইন বন্ধ করার ব্যবস্থাও করা উচিত পাকিস্তানের।

তবে পাকিস্তানের নিজেদের মূল্যায়ন অনুযায়ী এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলির বিপদ ‘মাঝারি’ স্তরের। ইসলামাবাদের যুক্তি, স্টেট ব্যঙ্ক অব পাকিস্তান এবং সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন অব পাকিস্তানের তদন্তে এই জঙ্গিদের অর্থ জোগান বা ‘মানি লন্ডারিং’-এর তেমন কোনও প্রমাণই পায়নি। কিন্তু ইমরান সরকারের এই যুক্তি বা মূল্যায়ন মানতে নারাজ।

আরও পডু়ন: ছাঁটাই এ বার এইচএসবিসি ব্যাঙ্কে? চাকরি খোয়াতে পারেন ১০ হাজার উচ্চপদস্থ কর্মী

এফএটিএফ-এর সদস্য ভারত-সহ প্রায় সব দেশই সন্ত্রাস প্রশ্নে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরব। এই সব দেশের অভিযোগ, হাফিজ সইদ, মাসুদ আজহারের মতো রাষ্ট্রপুঞ্জের ঘোষিত বিশ্ব-সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কোনও কড়া ব্যবস্থা নেয়নি বা নেয় না পাকিস্তান। সেখানকার সন্ত্রাস দমন আইনও আন্তর্জাতিক মানের নয়। এফএটিএফ-এর এই রিপোর্টেও ফের তার প্রমাণ মিলল বলেই মত কূটনৈতিক মহলের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pakistan FATF Terrorism Grey List
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE