Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
America

চিনা সেনার মহড়ার মাঝেই দক্ষিণ চিন সাগরে রওনা মার্কিন রণতরীর

প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের কাছে চিনের সামরিক মহড়া। দক্ষিণ চিন সাগরের ঠিক কোথায় মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ দুটির গন্তব্য তা জানা যায়নি।

—ফাইল চিত্র

—ফাইল চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০২০ ১৬:৫৩
Share: Save:

ভারতের সঙ্গে সীমান্ত সঙ্ঘাতের মধ্যেই বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে আমেরিকার সঙ্গে নতুন করে অশান্তিতে জড়িয়ে পড়ল চিন। তার জেরে উত্তেজনা বাড়ছে ওই এলাকায়। বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে সামরিক মহড়া চালাচ্ছে বেজিং। কিন্তু চিনের রক্তচাপ বাড়িয়ে, শনিবার ওই সাগরেই মহড়া দেওয়ার জন্য পাল্টা দুটি রণতরী (এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার) পাঠিয়েছে আমেরিকা। পেন্টাগনের এই পদক্ষেপ নিয়ে সরব হয়েছে বেজিং। কিন্তু বিতর্কিত এলাকায় সেনা মহড়া নিয়েও চিনকে পাল্টা তোপ দেগেছে আমেরিকা এবং দক্ষিণ চিন সাগরের উপকূলবর্তী একাধিক দেশ।

দক্ষিণ চিন সাগরের দখলদারি নিয়ে টানাপড়েন দীর্ঘদিনের। এ বার বিস্তৃত ওই সাগরে চিন-আমেরিকার স্নায়ুযুদ্ধকে ঘিরে নতুন করে ‘ঝড়’ উঠছে। গত সপ্তাহেই চিন ঘোষণা করে, পয়লা জুলাই থেকে তারা ৫ দিনের জন্য দক্ষিণ চিন সাগরের প্যারাসেল দ্বীপপুঞ্জের কাছে সামরিক মহড়া চালাবে। অথচ ওই দ্বীপটির দখল নিয়েও চিনের সঙ্গে ভিয়েতনামের দ্বন্দ্ব রয়েছে। এই সেনা মহড়া চলাকালীনই দক্ষিণ চিন সাগরের উদ্দেশে রওনা দেয় দুটি মার্কিন রণতরী, ইউএসএস নিমিৎজ এবং ইউএসএস রোনাল্ড রেগান। তবে বিস্তৃত ওই সাগরের ঠিক কোথায় মার্কিন যুদ্ধ জাহাজ দুটির গন্তব্য তা জানা যায়নি।

আমেরিকা এবং চিন, শুল্ক নিয়ে দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল। তাতে ঘি ঢেলেছে করোনা পরিস্থিতি এবং হংকং নিয়ে চিনের আগ্রাসী পদক্ষেপ। এমন পরিস্থিতিতে বিতর্কিত দক্ষিণ চিন সাগরে মার্কিন এয়ারক্র্যাফ্ট ক্যারিয়ার ঢুকে পড়া নিয়ে দুই শক্তিধরের মধ্যে দ্বন্দ্ব আরও জোরাল হয়েছে। এর প্রেক্ষিতেই বেজিংয়ের নাম না করে মার্কিন নৌবাহিনী জানিয়েছে, ‘‘ইন্দো-প্যাসিফিক এলাকাকে স্বাধীন এবং মুক্ত করার সমর্থনেই’’ এই পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য নিয়ে ইউএসএস রোনাল্ড রেগানের স্ট্রাইক গ্রুপের কম্যান্ডার জর্জ এম উইকঅফ সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘‘আমাদের সঙ্গী এবং বন্ধু শক্তিকে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বার্তা দিতেই এই পদক্ষেপ।’’ কী সেই বার্তা? সে কথাও স্পষ্ট করে দিয়েছেন উইকঅফ। তাঁর মতে, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং স্থিতাবস্থা বজায় রাখতেই এই পদক্ষেপ।

আরও পড়ুন: ভারত তার ভূমিকা স্থির করে নিয়েছে, বিশ্বকে সেটাই বোঝালেন মোদী​

চিনের সামরিক মহড়ারও নিন্দা করেছে আমেরিকা। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে শুক্রবার আমেরিকার অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দেয় বেজিং। দক্ষিণ চিন সাগরে উত্তেজনা বৃদ্ধির জন্য ওয়াশিংটনকেই দায়ী করেছে তারা। সামরিক মহড়া নিয়ে চিনকে তোপ দেগেছে ভিয়েতনাম, ফিলিপিন্সও। তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে, এমন পদক্ষেপের ফলে তাদের সঙ্গে বেজিংয়ের কূটনৈতিক সম্পর্কে জোরাল প্রভাব পড়বে।

আরও পড়ুন: আপনি চিনকে চিন বলতে পারলেন না?​

দক্ষিণ চিন সাগর ঘিরে চিন ছাড়াও রয়েছে ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, তাইওয়ান, ফিলিপিন্সের মতো দেশ। বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ওই সাগরের গুরুত্ব অপরিসীম। কারণ ওই সাগরের উপর দিয়েই দুনিয়ার এক তৃতীয়াংশ জাহাজ চলাচল করে। পাশাপাশি প্রচুর খনিজ সম্পদও রয়েছে ওই এলাকায়। অভিযোগ, সমস্ত ছোটখাট দেশকে সরিয়ে একাই দক্ষিণ চিন সাগরে কর্তৃত্ব করতে চাইছে বেজিং। কিন্তু ওয়াশিংটনের নয়া পদক্ষেপের ফলে চাপ বাড়ল বেজিংয়ের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE