ক্যামেরা, লাইমলাইট থেকে দূরে রাখেন নিজের মেয়েকে, নিজের ব্যক্তিগত জীবনকে। সেই রানি মুখোপাধ্যায় কী ভাবে নিজের ১০ বছরের কন্যা আদিরাকে বড় করে তুলছেন, সে নিয়ে অনেকের মধ্যেই কৌতূহল রয়েছে। বিশেষ করে বাঙালিদের মনে প্রশ্ন জাগে, যত বড় তারকাই হোন না কেন, শেষমেশ তো রানি একজন বাঙালি মা। আদিরার সঙ্গে তাঁর সম্পর্কে কি ঘরোয়া বাঙালিয়ানার ছাপ রয়েছে? সম্প্রতিই সেই প্রশ্নের অংশত উত্তর মিলল।
আদিরার সঙ্গে রানির সম্পর্কে কি ঘরোয়া বাঙালিয়ানার ছাপ রয়েছে? ছবি: সংগৃহীত।
রন্ধনশিল্পী সঞ্জীব কপূরের সঙ্গে কথোপকথনের সময়ে রানি জানালেন, আদিরা যখন বায়না করে, তখন তিনি মজাদার এক কৌশল প্রয়োগ করেন। তাতে যথাসম্ভব কাজও হয়। রানির কথায়, ‘‘রোজ আমার মেয়ের বায়না, মা আমার রসগোল্লা চাই। এ দিকে, চার দিকে এখন বলাবলি হচ্ছে, মিষ্টি থেকে দূরে থাকা উচিত, মিষ্টি এখন বিষের সমান। আমিও এই তত্ত্বের সঙ্গে সহমত। কিন্তু মেয়েকে যদি বারণ করি, তাতে তো সমস্যা হবে। ছোটদের যেটি করতে বেশি নিষেধ করা হয়, তারা সেটিই আরও বেশি করে করে। তাই আমি নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করি। আমি বারণ করি না। এখন বলি, খাও খাও। তাতে তার এক দিন মনে হবে, মায়ের তো বারণ করা উচিত। কেন করছে না? তার মানেই কোনও গন্ডগোল আছে। তার চেয়ে বরং করলাই খাই।’’
মা-বাবারা বুঝেশুনে প্রয়োগ করুন এই টোটকা, নয়তো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে সন্তানের। ছবি: সংগৃহীত।
আসলে ‘রিভার্স সাইকোলজি’ বা উল্টো বলে নিজের কথায় রাজি করানোর পদ্ধতি অবলম্বন করেন রানি। সন্তানের লালনপালনে এমন টোটকা যে কার্যকরী হতে পারে, তা অনেকেই মনে করেন। নিজেদের সন্তানের ক্ষেত্রে তা প্রয়োগও করেন। শিশু যা করছে, তার উল্টো চাইছেন বাবা-মা। কিন্তু তা মুখে বলছেন না। বরং যা তাঁরা চান না, সেটিই করতে বলেন। কখনও সখনও জেদের বসে বাবা-মা যা বলছেন, তার উল্টোটা করে বসে ছোটরা। আর সেখানেই সফল হন বড়রা। শিশুরা অনেক সময়ে নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নিতে চায়। তখন এই ভাবে উল্টো কথা বললে তারা অন্য কাজটি করতে চাইবে।
আরও পড়ুন:
যদিও এই কৌশল নিয়ে নানা রকমের প্রশ্ন ওঠে। এই ধরনের ‘ম্যানিপুলেশন’ কখন ন্যায়-অন্যায়ের গণ্ডি পেরিয়ে যাচ্ছে, টের পাওয়া যায় না। সন্তানের ভালর জন্য বলতে গিয়ে কখনও কখনও হিতে বিপরীত হয়ে যায়। বা আস্থা ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। অনেকেই এই কৌশলের প্রসঙ্গে শিশুমন নিয়ে খেলার অভিযোগ তোলেন। তাই বুঝেশুনে প্রয়োগ করা উচিত এই টোটকা। নয়তো ক্ষতি হয়ে যেতে পারে সন্তানের, বা সন্তান-অভিভাবকের সম্পর্কের।