সাঁইথিয়ার সভায় অনুব্রত মণ্ডল। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র
লোকসভা ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে দলের কোনও সভায় তাঁকে দেখা যায়নি। কালীঘাটে দলনেত্রীর ডাকা বৈঠকে অবশ্য হাজির ছিলেন। শুক্রবার প্রকাশ্য সভায় সেই চেনা মেজাজে বিরোধীদের হুঁশিয়ারি দিলেন বীরভূম জেলা তৃণমূলের সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল।
বীরভূম ও বোলপুর, দুই লোকসভা আসন তৃণমূল জিতলেও বিপুল ভোট পেয়ে দু’নম্বরে উঠে এসেছে বিজেপি। তার পর থেকেই বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে বারবার তপ্ত হচ্ছে বীরভূমের বিভিন্ন এলাকা। মারধর, ভাঙচুর, কার্যালয় দখল থেকে আগুন লাগানোর অভিযোগ উঠছে দু’পক্ষের বিরুদ্ধেই। দলের কর্মীদের উপরে ‘হামলা’র প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে সাঁইথিয়ার ডাকবাংলো মোড়ে ধিক্কার সমাবেশের আয়োজন করে তৃণমূল। সেই সভামঞ্চ থেকেই কর্মীদের প্রতি জেলা সভাপতির আশ্বাস, ‘‘আমি ভয় পাই না, জীবনে ভয় পাইনি। আপনারও ভয় পাবেন না, আমরা আছি।’’
সাঁইথিয়ার বিধায়ক, পুরসভার চেয়ারম্যান, বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধান ও কর্মীদের প্রশংসা করার পরেই অনুব্রত বলেন, ‘‘যদি কেউ ভাবেন ঝামেলা করব, মস্তানি করব, আমরাও রাজি আছি। চোখ রাঙাবেন না, ধার ধারি না। দল করুন ভদ্র ভাবে।’’ এখানেই না থেমে তাঁর হুঁশিয়ারি, ‘‘মদ খেয়ে কারও বাড়িতে বাড়িতে পাঠাবেন না। তা হলে আমি গাঁজা খাইয়ে (লোক) পাঠিয়ে দেব। আপনারা যা করবেন, আমরা তার চারগুণ করব। যদি ভাবেন তৃণমূল কংগ্রেস হয়ে ঘরে বসে আছি, তা হলে মূর্খের মতো ভাবছেন। আপনি ছড়ি দেখালে, আমরা ডান্ডা দেখাব। আপনি বাড়ি মারলে, আমরা পা ভেঙে দেব!’’
অনুব্রতের এই কথা শুনে সভায় হাততালির ঝড় ওঠে। সিপিএমকে আক্রমণ করে অনুব্রত বলেন, ‘‘সিপিএমের হার্মাদ, তোমরা বিজেপিতে ঢুকে খুব মজা করছ। এমন পেটাব, শিক্ষা দিয়ে দেব। কাউকে ছেড়ে কথা বলব না।’’
জেলা বিজেপি সভাপতি রামকৃষ্ণ রায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘অনুব্রত তো বটেই, গোটা তৃণমূল দলটাই ভয় পেয়ে গিয়েছে ভোটের ফল দেখে। তাই এই ধরনের কথা বলতে হচ্ছে। এটা নতুন কিছু নয়। ওরা যে সন্ত্রাস চালিয়েছে, তার জন্যই মানুষ আজ বিজেপি-তে নাম লেখাচ্ছে। এখন নিজেদের কর্মীদের মনে শক্তি জোগাতে এমন উত্তেজক বক্তৃতা দিতে হচ্ছে।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদক মনসা হাঁসদার বক্তব্য, ‘‘অনুব্রতবাবু নিজের দলটা নিয়েই ভাবুন, সিপিএমকে নিয়ে ভাবার দরকার নেই। তৃণমূলের এখন যা অবস্থা, তাতে দলটাই থাকে কিনা সন্দেহ!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy