Advertisement
২২ মে ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

পরীক্ষার খরচ কমবে কবে, উঠছে প্রশ্ন

সরকারি পরিকাঠামোয় করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে হলেও বেসরকারি ল্যাবগুলিতে নমুনা পরীক্ষার জন্য সাড়ে চার হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে।

এএফপি-র প্রতীকী ছবি।

এএফপি-র প্রতীকী ছবি।

সৌরভ দত্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০২০ ০৩:৪৯
Share: Save:

আইসিএমআরের বক্তব্য, পরীক্ষার খরচ কমানো যায়। সেই মর্মে বেসরকারি ল্যাবগুলি যাতে করোনা পরীক্ষার মূল্য কম নেয়, সেই পরামর্শ ইতিমধ্যে রাজ্য সরকারগুলিকে দিয়েছে কেন্দ্রীয় গবেষণা সংস্থা। কিন্তু প্রশ্ন হল, এ রাজ্যে তা কার্যকর হবে কবে।

সরকারি পরিকাঠামোয় করোনা পরীক্ষা বিনামূল্যে হলেও বেসরকারি ল্যাবগুলিতে নমুনা পরীক্ষার জন্য সাড়ে চার হাজার টাকা করে দিতে হচ্ছে। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, রাজ্যে যে ভাবে সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে অসংখ্য মানুষের নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন হবে। পরীক্ষার খরচ বেশি হলে বেশির ভাগ মানুষ অসহায় হয়ে পড়বেন। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টর্স ফোরামের সভাপতি অর্জুন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘অতি মহামারি আটকাতে হলে টেস্টের খরচ কমাতে হবে।’’

দিন দশেক আগে প্রতিটি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের (আইসিএমআর) তরফে চিঠি দিয়ে জানানো হয়, গোড়ায় টেস্টিং কিট এবং রিএজেন্ট আমদানি করতে হচ্ছিল। কিন্তু এখন দেশীয় অনেক সংস্থা কিট, রিএজেন্ট এবং ভাইরাল ট্রান্সপোর্ট মিডিয়া তৈরি করছে। তাই পরীক্ষার দাম কমানোর আর্জি জানানোর জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দেয় আইসিএমআর।

আরও পড়ুন: পর পর তিন দিন রাজ্যে নতুন করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা তিনশো ছাড়াল

বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নমুনা পরীক্ষার খরচ সাড়ে চার হাজার টাকা থেকে তিন হাজার ন’শো টাকা করেছে মেডিকা। এর পর বাকিদের উপরেও চাপ তৈরি হয়েছে। মেডিকার কর্ণধার অলোক রায় বলেন, ‘‘এখন অনেক মানুষের পরীক্ষা করানো দরকার। তাই পরীক্ষার মূল্য কমিয়েছি।’’

আইসিএমআরের পরামর্শ নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বেসরকারি হাসপাতালগুলি। আমরির গ্রুপ সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘এখনও কিট খুব সহজে পাওয়া যাচ্ছে তা নয়। কিট পাওয়া-না পাওয়ার উপরে পরীক্ষার খরচের বিষয়টি নির্ভর করছে। পরীক্ষার খরচ যাতে সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আসে, তা নিয়ে চিন্তাভাবনা করছি।’’ স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, সিএমআরআই-তে সিবি-ন্যাট পদ্ধতিতে নমুনা পরীক্ষা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নমুনা পরীক্ষার কাজে জিনএক্সপার্ট ব্যবহার করা হচ্ছে। এর জন্য প্রয়োজনীয় কার্ট্রিজ আমেরিকা থেকে আসে। সিএমআরআইয়ের এক চিকিৎসক জানান, প্রতি নমুনা পিছু ন্যূনতম দামই নিচ্ছেন তাঁরা। ডি লাল প্যাথ ল্যাবের এক আধিকারিকও জানান, পরীক্ষার খরচ কমানো নিয়ে তাঁরা কিছু ভাবছেন না।

তবে পিয়ারলেসের সিইও সুদীপ্ত মিত্র বলেন, ‘‘এখন যে হেতু অনেক নমুনা পরীক্ষা হচ্ছে, তাই গড়পড়তা খরচও কমেছে। সেই হিসেবে টেস্টের খরচ কমানোর সুযোগ রয়েছে।’’ সুরক্ষার ল্যাবরেটরির ডিরেক্টর চিকিৎসক অভীক বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, স্বাস্থ্য দফতরের ব্যবস্থাপনায় নমুনা এলে ২৮০০ টাকা নেওয়া হচ্ছে। বেসরকারি হাসপাতালের জন্য তা সাড়ে চার হাজার টাকা। পরীক্ষার খরচ কমানোর বিষয়টি তাঁরাও বিবেচনা করছেন। স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায় মেডিকা-র পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, ‘‘আশা করব, বাকিরাও সাধারণ মানুষের কথা ভেবে এগিয়ে আসবেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE