Advertisement
০২ মে ২০২৪

আজ রাজ্যপালের সফরে সতর্ক যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্য সুরঞ্জন দাস তিন ছাত্র সংসদকে ডেকে জানিয়ে দিয়েছেন, আচার্য-রাজ্যপাল ক্যাম্পাসে ঢুকলে যেন কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না-ঘটে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৫০
Share: Save:

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে ঘিরে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ডের এক মাসের মধ্যে আজ, শুক্রবার আবার সেখানে যাচ্ছেন আচার্য-রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের বৈঠকে যোগ দিতে আচার্যের এই আগমন নিয়ে যাদবপুর-কর্তৃপক্ষ সবিশেষ সতর্ক।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, উপাচার্য সুরঞ্জন দাস তিন ছাত্র সংসদকে ডেকে জানিয়ে দিয়েছেন, আচার্য-রাজ্যপাল ক্যাম্পাসে ঢুকলে যেন কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা না-ঘটে। তাঁর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা তো থাকছেই। ক্যাম্পাসের বাইরেও পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য শিক্ষক সংগঠন জুটা-র তরফে বৃহস্পতিবার আবেদন জানিয়েছেন পার্থপ্রতিম রায়ও।

১৯ সেপ্টেম্বর বাবুল যাদবপুরে গিয়ে প্রবল ছাত্র-বিক্ষোভের মুখে পড়েন। শেষ পর্যন্ত রাজ্যপালই গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। যদিও রাজ্য সরকার তাঁকে অনুরোধ করেছিল, তিনি যেন সেখানে না-যান। আচার্য-রাজ্যপাল এক মাসের মধ্যে দ্বিতীয় বার যাচ্ছেন যাদবপুর ক্যাম্পাসে। সেই জন্যই বিশ্ববিদ্যালয়-কর্তৃপক্ষ বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করছেন। আজ বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের বৈঠক শুরু হওয়ার কথা।

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্টের গঠন

• রাজ্যপাল তথা আচার্য - চেয়ারম্যান
(বৈঠকের সভাপতিও)
• উপাচার্য
• দুই সহ-উপাচার্য
• চার ফ্যাকাল্টির ডিন
• উচ্চশিক্ষা সচিব
• অর্থসচিব
• উচ্চশিক্ষা সংসদের প্রতিনিধি
• মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, মাদ্রাসা শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি
• বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের প্রধান
• রাজ্যপালের মনোনীত পাঁচ সদস্য
• ইউজিসির চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, এআইসিটিই-র চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, এনসিটিই-র চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি (ফাঁকা)
• ১৫ জন নির্বাচিত শিক্ষক, এক জন নির্বাচিত আধিকারিক, এক জন নির্বাচিত শিক্ষাকর্মী (ফাঁকা)
• জাতীয় শিক্ষা পরিষদের এক প্রতিনিধি (ফাঁকা)
• এক জন বিশেষ আমন্ত্রিত (ফাঁকা)

সুত্র : যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট

কোর্টের বৈঠকে আসন্ন সমাবর্তনে সাম্মানিক ডিএসসি এবং ডিলিট প্রাপকদের নাম চূড়ান্ত হওয়ার কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্ট্যাটিউট’ বা বিধি অনুযায়ী রাজ্যপালই ওই কোর্টের চেয়ারম্যান। তবে সাধারণত কোনও রাজ্যপাল কোর্টের বৈঠকে থাকেন না। শিক্ষা সূত্রের খবর, বর্তমান রাজ্যপাল নিজেই এ বারের বৈঠকে আসতে চেয়েছেন। এ বছর যাদবপুরের সমাবর্তনে কবি শঙ্খ ঘোষ ও প্রাক্তন বিদেশসচিব সলমন হায়দারকে সাম্মানিক ডিলিট এবং আইএসআই-এর অধিকর্ত্রী সঙ্ঘমিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিজ্ঞানী সিএনআর রাওকে সাম্মানিক ডিএসসি ডিগ্রি দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য কোর্টের কাছে পাঠানো হয়েছে। কোর্টের বৈঠকে সাম্মানিক ডিএসসি এবং ডিলিট দেওয়ার বিষয়ে রাজ্যপাল দ্বিমত পোষণ করবেন কি না, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে জোর জল্পনা চলছে। তবে আইন অনুযায়ী কোর্টের দুই-তৃতীয়াংশ সদস্য একমত হলে রাজ্যপাল তা অনুমোদন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অভিজ্ঞ আধিকারিকের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে রাজ্যপাল যদি দ্বিমত পোষণ করেন, তা হলে অভূতপূর্ব পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে। এবং সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার জন্য আবার ফিরে যেতে পারে ডিনদের কমিটিতে।

ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিদায়ী ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক অভীক দাস জানান, তিন ছাত্র সংসদ মিলে রাজ্যপালের কাছে দাবিপত্র পেশ করা হবে। তাঁরা চান, বাবুল ক্যাম্পাসে আসার পরে এবিভিপি যে-ভাবে ভাঙচুর চালিয়েছিল, রাজ্যপাল যেন তার নিন্দা করেন। আবেদন জানানো হবে: কেন্দ্র ‘ইনস্টিটিউট অব এমিনেন্স’ করবে বলেও যাদবপুরকে এখনও এই শিরোপা দেয়নি কেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বহু শিক্ষকপদ কেন খালি পড়ে আছে— রাজ্যপাল তা দেখুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jagdeep Dhankhar Jadavpur University Babul Supriyo
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE