গ্রিন জ়োনে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন।—ছবি পিটিআই।
রাজ্যের যে-সব জেলা থেকে সম্প্রতি করোনা-সংক্রমণের কোনও খবর নেই, সেই সব গ্রিন জ়োনে লকডাউন শিথিল করার সিদ্ধান্ত নিল নবান্ন।
বুধবার কয়েক জন মন্ত্রী ও আমলাকে নিয়ে বৈঠকের পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শুধু করোনা নিয়ে থাকলে তো চলবে না!... সোমবার থেকে কিছু কিছু সিদ্ধান্ত কার্যকর করব। খুব জরুরি, যেগুলি মানুষের প্রয়োজন রয়েছে, তেমন গতিবিধি চালু করা হচ্ছে।’’ প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণামতো ৪ মে দ্বিতীয় দফার লকডাউন মেউঠে যাওয়ার কথা। সে দিন থেকে গ্রিন জ়োন হিসেবে চিহ্নিত রাজ্যের আটটি জেলায় অত্যাবশ্যক নয় এমন পণ্যের দোকান খোলার ছাড়পত্র দিতে চলেছে রাজ্য। জেলার মধ্যে বাস চলাচলের অনুমতিও দেওয়া হবে। তবে সব ক্ষেত্রেই পারস্পরিক দূরত্ব বজায় রাখার বিধি মেনে চলতে হবে। বাসে একসঙ্গে ২০ জনের বেশি যাত্রা করতে পারবেন না। এর অন্যথা হলে সরকার যে অনুমতি প্রত্যাহারও করতে পারে, সেই ইঙ্গিত দিয়ে রেখেছেন মমতা।
দেশের মতো গোটা রাজ্যে প্রায় সব অর্থনৈতিক কাজকর্ম দীর্ঘদিন বন্ধ। অর্থনীতি ধীরে ধীরে সচল করার লক্ষ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য—উভয় সরকারই কিছু কিছু ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সেই অনুযায়ী, সাধারণ মানুষের যে দোকানগুলি একান্ত প্রয়োজন, গ্রিন জ়োনে সেগুলি খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
প্রশাসন জানিয়েছে, কোন এলাকায় কী ধরনের দোকান খুলবে, কোন দোকান খুললে বেশি ভিড় হবে না, কোনটা একেবারে অপ্রয়োজনীয়— এ সব খতিয়ে দেখবে পুলিশ প্রশাসন। সংশ্লিষ্ট জেলার জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার সংশ্লিষ্ট অনুমতি দেবেন। গ্রিন জ়োনে বাস চলাচলের বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে পরিবহণ দফতর, জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসক। মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ বলেন, ‘‘নিজে থেকে দোকান খুলবেন না। ১ মে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হবে। সোমবার থেকে কোথায় কী ধরনের দোকান খুলবে এবং অনুমতি মিলবে, তা বলা হবে।’’
আরও পড়ুন: গ্রিন জোনে কী কী খুলবে সোমবার থেকে, জেনে নিন
করোনা-সংক্রমণের তীব্রতা অনুযায়ী রাজ্যকে রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জ়োনে ভাগ করেছে রাজ্য সরকার। রাজ্য আগেই জানিয়েছিল, রেড জ়োন বা তার ভিতরে থাকা কন্টেনমেন্ট এলাকায় কোনও নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা হচ্ছে না। অরেঞ্জ বা গ্রিন জ়োনে পরিস্থিতি অনুযায়ী নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা হলেও সেখান থেকে করোনা-আক্রান্তের খবর পেলে ফের সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে। এই প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনা ২১ মে পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত আগেই ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ দিন তিনি বলেন, ‘‘কন্টেনমেন্ট এলাকাগুলিতে কিছু করতে পারব না এখন। পুরো লকডাউন থাকবে। অসুবিধা হবে অনেকের, কিছু করার নেই, ক্ষমা চেয়ে নেব। অনেক সহযোগিতা করেছেন সকলে। আর একটু সহযোগিতা করুন।’’ তবে কলকাতায় ট্যাক্সির ক্ষেত্রে আরও কিছু ছাড় দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
আরও পড়ুন: ১০১টি বাসে কোটা থেকে ফিরছেন বাংলার ২৫০০ পড়ুয়া
গত সপ্তাহে অত্যাবশ্যক নয় এমন দোকান খোলার ব্যাপারে কেন্দ্র যে নির্দেশিকা দিয়েছিল, তা ঘিরে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। রাজ্যের মতে, লকডাউন চলার মধ্যে সব দোকান খুলে দিলে করোনা-সংক্রমণ রোখার আসল উদ্দেশ্য ধাক্কা খাবে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রের কাছ থেকে ব্যাখ্যা চাইলেও তা এখনও আসেনি বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘দোকান খোলা নিয়ে কেন্দ্রের থেকে ব্যাখ্যা এখনও পাইনি, তার জন্য অপেক্ষায় আছি। তাই পরিকল্পনা করতে অসুবিধা হচ্ছে।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy