এই গাড়িতে গুলিবিদ্ধ হন সালাউদ্দিন। (ইনসেটে সালাউদ্দিন)
পরিবহণ ব্যবসায়ী মহম্মদ সালাউদ্দিন খুনের ঘটনায় দোষীদের যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করল শিয়ালদহ আদালত। সালাউদ্দিনের বান্ধবী মিলি পাল ও তাঁর প্রেমিক বাপি সেনকে ওই খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়। শিয়ালদহ আদালত আগেই দু’জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। বুধবার তাদের যাবজ্জীবনের সাজা শোনালেন বিচারক।
২৫ জুন, ২০১১। ৯ বছর আগের সেই ঘটনা এখনও অনেকের স্মৃতিতে রয়েছে। ওই দিন ভোরের দিকে বছর বিয়াল্লিশের সালাউদ্দিন সল্টলেকে গাড়ির মধ্যেই গুলিবিদ্ধ হন। ওই অবস্থাতেই গাড়ি চালিয়ে প্রায় তিন কিলোমিটার এসে ঢুকে পড়েন উল্টোডাঙা থানায়। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীকে তিনি জানান, তাঁকে সল্টলেকে ১৩ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে গুলি করা হয়েছে। এর পর তাঁকে আরজিকর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, সল্টলেকের ১৩ নম্বর ট্যাঙ্কের কাছে ঘটনাটি ঘটার আগে সালাউদ্দিন ইএম বাইপাসের ধারে একটি পানশালায় গিয়েছিলেন। রাত পর্যন্ত তিনি মদ্যপান করেন। ওই রাতে পানশালায় কার সঙ্গে তিনি মেলামেশা করেন, সে বিষয়েও খোঁজ শুরু হয়। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে তাঁকে এক নর্তকীর সঙ্গে দেখা যায়। তখন কলকাতা পুলিশের গুন্ডা দমন শাখা এবং হোমিসাইড শাখার অফিসারদের সন্দেহ হয়, লুঠের উদ্দেশ্যে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। এই ঘটনায় মিলিকে জেরা করে বাপির খোঁজ পাওয়া যায়। কিন্তু তাঁরাই যে খুন করেছ, এ বিষয়ে প্রাথমিক স্তরে নিশ্চিত হতে পারছিল না পুলিশ। এর মধ্যেই ফরেন্সিক দল গাড়ির পিছনের আসন থেকে একটি সিগারেটের ফিল্টারের অংশ সংগ্রহ করে। ওই নমুনার সূত্র ধরেই সালাউদ্দিন হত্যাকাণ্ডের রহস্যের ভেদ করে পুলিশ।
আরও পড়ুন: রজত দে হত্যা মামলায় স্ত্রী অনিন্দিতার যাবজ্জীবন
ডিএনএ পরীক্ষার জন্য উদ্ধার হওয়ার সিগারেটের ফিল্টার হায়দারাবাদের সেন্ট্রাল ফরেন্সিক ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়। তার পর বাপির ডিএনএ পরীক্ষাও করা হয়। দু’টি রিপোর্টেই একই ব্যক্তির কথা বলা হয়। এর পরেই নিশ্চিত হয়ে যায়, খুনের নেপথ্যে বাপি এবং মিলি জড়িত। তদন্তে আরও উঠে আসে, তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় স্বামী-স্ত্রী অথবা প্রেমিক-প্রেমিকা পরিচয়ে ছিলেন। নাম ভাঁড়িয়ে।
আরও পড়ুন: স্বামীকে টুকরো করে রেঁধে খাওয়ানোর খবর শেয়ার করেছিলেন অনিন্দিতা
তদন্তে চলাকালীন সালাউদ্দিনের পরিবার পুলিশকে জানায়, তাঁর কাছে থাকা মোবাইল ফোন, মানিব্যাগ, আংটি, সোনার গয়না পাওয়া যায়নি। জেরায় মিলি ও বাপি জানায়, তাঁদের সল্টলেকে নামাতে গিয়েছিলেন সালাউদ্দিন। সেখানেই তাঁরা বন্দুক দেখিয়ে ও সব ছিনতাই করে নেয়। পরে খুন করা হয় সালাউদ্দিনকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy