প্রতীকী ছবি
দমদম জেলে বন্দি-পুলিশ সংঘর্ষের পরে এক মাসেরও বেশি সময় কেটে গিয়েছে। অথচ, সরকারি ভাবে এখনও জানানো হয়নি, ওই ঘটনায় ঠিক ক’জন বন্দির মৃত্যু হয়েছিল। সূত্রের খবর, গত ২১ মার্চের ওই ঘটনায় ছ’জন বন্দির মৃত্যু হয়েছিল। আহত হন ২৫ জন বন্দি। ডিজি (কারা)-সহ একাধিক পুলিশ ও কারাকর্মীও জখম হয়েছিলেন।
মৃত ছ’জনের মধ্যে এক বাংলাদেশিও ছিলেন। প্রশাসন সূত্রের দাবি, তাঁর ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেই বিধিমাফিক যা করণীয় করা হয়েছিল। কিন্তু মৃতদের কারও পরিচয় প্রকাশ্যে না আসায় দেহ শনাক্তকরণে সমস্যা হচ্ছিল। পরে সেই সমস্যা মিটে যায়। পরিবারের লোকজনই মৃতদেহগুলি শনাক্ত করেন বলে দাবি প্রশাসনের একাংশের।
জেল কর্তৃপক্ষের দাবি, সংঘর্ষের রেশ কাটিয়ে ছন্দে ফিরছে দমদম সেন্ট্রাল জেল। তবে মাস গড়ালেও ঘটনার সরকারি তথ্য এখনও পর্যন্ত দেওয়া হয়নি, এমনই অভিযোগ মানবাধিকার সংগঠন এপিডিআর-এর। এমনকি, তাদের তরফে তথ্য জানার অধিকারে (আরটিআই) আবেদন করা হলেও তার জবাব মেলেনি বলে অভিযোগ।
জেলের অফিসই তো অন্যত্র হচ্ছে, তবে কিসের স্বাভাবিক ছন্দ? এ প্রসঙ্গে কারা দফতরের কর্তারা মনে করাচ্ছেন, যে কোনও ঘটনার পরেই একটা থমথমে ভাব থাকে। সেই থমথমে পরিবেশ কাটিয়েই জেল ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে। ‘‘এমন কোনও ঘটনার পরে সব স্বাভাবিক হতে অন্তত আড়াই-তিন মাস লেগে যায়।’’— এমনই বলছেন এক কারা-কর্তা।
করোনা-আতঙ্কের জেরে মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছিলেন বন্দিরা। জেলের প্রায় ১০টি অফিসে ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। পুড়ে গিয়েছিল অনেক নথি। ক্যান্টিনেও দেদার ভাঙচুর চলেছিল। খোয়া গিয়েছিল জেল কর্তৃপক্ষের হেফাজতে থাকা গয়না, মোবাইল ও টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল একটি টেলিফোন বুথ। প্রচুর ওষুধও নষ্ট হয়ে যায়। ভাঙা হয়েছিল গেটও। তবে তা দ্রুত মেরামত করা হয়।
খোয়া যাওয়া গয়না, মোবাইল ও টাকা অবশ্য পরে উদ্ধার হয় বন্দিদের কাছ থেকে। তবে আদালতের নির্দেশের অনেক নথি পুড়ে যায়। সেই সব নথি তৈরির কাজ চলছে। তা যথেষ্ট সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য। কারণ, বিভিন্ন আদালতের সঙ্গে যোগাযোগ করে তা প্রস্তুত করতে হবে জেল কর্তৃপক্ষকে। এর জন্য বিভিন্ন আদালতে চিঠি পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। লকডাউন চলায় জেলের ক্ষতিগ্রস্ত দশটি অফিস মেরামত করা যায়নি এখনও। তাই এখন জেলের অন্য দু’টি ঘরে অফিসের কাজ চলছে। ফোন বুথ ঠিক না হওয়ায় বাড়িতে ফোন করা নিয়ে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বন্দিদের। ক্যান্টিন না থাকায় শুকনো খাবার কেনার ইচ্ছে থাকলেও তা মিলছে না। এক কর্তার কথায়, ‘‘বন্দিরা এখন বুঝছেন, নিজেদেরই ক্ষতি করেছেন তাঁরা।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy