বিক্ষোভে শামিল পুলিশও। শনিবার লা পাজ়ে। এএফপি
কয়েক সপ্তাহ ধরে জনরোষ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছিল। চাকরি ছেড়ে পুলিশকর্মীদের একাংশ কাল সরকার-বিরোধী বিক্ষোভে শামিল হয়েছিলেন। বাড়তে থাকা চাপের মুখে আজ নতিস্বীকার করলেন প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস। ঘোষণা করলেন, ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
১৩ বছর ধরে বলিভিয়া শাসন করছেন মোরালেস। সংবাদমাধ্যমের সামনে ফের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে তিনি জানান, আন্তর্জাতিক একটি সংগঠন এ বছরের নির্বাচনের ফল নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে। তার প্রেক্ষিতেই এই সিদ্ধান্ত।
২০ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছিল। ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, ১০ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে জয়ী হয়েছেন মোরালেস। ভোটগণনার সময় ২৪ ঘণ্টার জন্য গণনা প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়েছিল। তার পর থেকেই বিরোধীরা বলতে শুরু করেন, রিগিং করে জয়ী হয়েছেন মোরালেস। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয় প্রেসিডেন্ট বিরোধী বিক্ষোভ। দফায় দফায় বিক্ষোভে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ইতিমধ্যেই তিন জন প্রাণ হারিয়েছেন।
গত সপ্তাহে উইনতো শহরের মেয়রের উপরে চড়াও হন এক দল বিক্ষোভকারী। মেয়র প্যাট্রিসিয়া আর্কের মুখে-চুলে লাল রং লেপে দেওয়া হয়। কেটে ফেলা হয় তাঁর চুল। খালি পায়ে শহরের একটি সেতুতে হাঁটানো হয় মেয়রকে। অনেক পরে পুলিশ গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে। গত শুক্রবার থেকে প্রশাসনের একাংশও মোরালেস সরকারের উপর চাপ বাড়াতে শুরু করে। কাল প্রেসিডেন্টের প্রাসাদে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকেরা একসঙ্গে দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দেন। তখন প্রেসিডেন্ট মোরালেস প্রাসাদে ছিলেন না। সরকারি আধিকারিকদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। মাত্র এক জন সামরিক রক্ষী ছাড়া প্রেসিডেন্টের প্রাসাদ কাল ছিল রক্ষীবিহীন। প্রাসাদের অদূরে থানার ছাদে দেখা গিয়েছে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে পুলিশকর্মীদের বিক্ষোভ। তাঁদের হাতে প্ল্যাকার্ডে লেখা: ‘আমরা মানুষের সঙ্গে আছি’। শয়ে শয়ে পুলিশ বিক্ষোভরত মানুষের পাশে হেঁটে মিছিলও করেন।
‘দ্য অর্গানাইজ়েশন অব আমেরিকান স্টেটস’ (যে সংস্থা দক্ষিণ আমেরিকার নির্বাচনগুলির উপরে নজর রাখে) জানিয়েছে, ভোটে স্বচ্ছতার অভাব ছিল। বিরোধী দলনেতা কার্লোস মেসা জরুরি অবস্থা জারি করার জন্য গত পরশুই পার্লামেন্টের কাছে আর্জি জানিয়েছিলেন। এই অবস্থায় আজ মোরালেস পুননির্বাচনের কথা ঘোষণা করেন। তাঁর কথায়, ‘‘বলিভিয়ায় শান্তি আর স্থিতিশীলতা ফেরানোর দায় আমার। সব ধরনের উদ্বেগ কমাতেই এই সিদ্ধান্ত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy