Advertisement
E-Paper

শীতে চিন্তামুক্ত হয়েই খান কফি, এড়িয়ে চলুন সাপ্লিমেন্ট

শীতে কফি তো সবাই খাই। ঝিমিয়ে পড়া মেজাজকে চাঙ্গা করতে এর জুরি নেই। আবার এই কফিই একটু নিয়ম মেনে খেয়ে শরীর থেকে ছেঁটে ফেলতে পারেন অতিরিক্ত ক্যালোরি।

সুজাতা মুখোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৫:৫০
ক্যালোরিতে রাশ টানবে কফি।—ফাইলচিত্র

ক্যালোরিতে রাশ টানবে কফি।—ফাইলচিত্র

কফির কিছু উপাদান শরীরে ক্যালোরি খরচের হার বাড়ায়৷ তার মধ্যে সবার প্রথমে আছে ক্যাফেইন৷ ক্যাফেইন স্নায়ুকোষ থেকে নিঃসৃত এক রাসায়নিক অ্যাডেনোসিনকে সাময়িক ভাবে অকার্যকর করতে পারে বলে ডোপামিন ও নরএপিনেফ্রিন হরমোনের ক্ষরণ বাড়ে, যাদের প্রভাবে বাড়ে এনার্জি৷ আসে তরতাজা ভাব৷ সে জন্যই ব্যায়ামের আগে এক কাপ কালো কফি খেলে ব্যায়াম করার ক্ষমতা প্রায় ১০–১২ শতাংশ বেড়ে যায়৷ পাল্লা দিয়ে বাড়ে ক্যালোরি খরচ৷ ব্যায়ামের পরে খেলে ক্লান্ত শরীর চট করে চাঙ্গা হয়৷ কিছু স্টাডিতে দেখা গেছে, আধ ঘণ্টা ব্যায়ামের পর যাঁরা জলের বদলে কফি খান, তাঁদের বেশি চর্বি ঝরে৷ তবে এ ব্যাপারে শেষ কথা বলার সময় এখনও আসেনি৷

আরও সুখবর

ক্যাফেইনের প্রভাবে রেস্টিং মেটাবলিক রেট, অর্থাৎ শুয়ে–বসে থাকার সময় যে পরিমাণ ক্যালোরি খরচ হয়, তা প্রায় ৩–১১ শতাংশ বেড়ে যায়৷ এবং এই অতিরিক্ত ক্যালোরিটুকু খরচ হয় চর্বি ভেঙেই৷ কফি পান আগের চেয়ে দ্বিগুণ করে দিলে, ওজন ও চর্বি ঝরার হার প্রায় ১৭–২৮ শতাংশ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা৷ তবে ব্যাপারটা সাময়িক৷ শরীর যত ক্যাফেইনের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে থাকে, তত এই প্রভাব কাটতে শুরু করে৷ তখন কফি পান দু’সপ্তাহের মতো বন্ধ রাখার পর আবার দু’সপ্তাহ ধরে খেলে এবং এ ভাবেই চালিয়ে গেলে নতুন করে কাজ হতে শুরু করে৷

কফি খেলে খিদে ও খাওয়ার ইচ্ছে কমে অনেক সময়৷ এ ব্যাপারে প্রধান ভূমিকা পালন করে কফি বিনে উপস্থিত ক্লোরোজিনিক অ্যাসিড নামের ফাইটোকেমিক্যাল৷ বিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এর প্রভাবে বৃহদন্ত্রে পিওয়াইওয়াই নামের প্রোটিন ক্ষরিত হয়ে খাওয়ার ইচ্ছে কমিয়ে দেয়৷ আবার খাবার খাওয়ার পর কালো কফি খেলে ক্লোরোজিনিক অ্যাসিডের দৌলতেই শরীরে গ্লুকোজ তৈরির হার কমে যায়৷ তার হাত ধরে কমে চর্বি জমার প্রবণতা৷

“তবে ক্যাফেইনের সবটাই গুণ, এমন নয়৷ বেশি কফি খেলে ঘুম কমে যেতে পারে৷ ক্যাফেইন যাঁদের সহ্য হয় না, তাঁদের মেজাজ খারাপ হতে পারে৷ বাড়তে পারে উদ্বেগ৷ বুক ধড়ফড় করতে পারে৷ গ্যাস–অম্বলে কাবু হতে পারেন”, জানালেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সব্যসাচী সেন৷

কতটুকু কফি, কখন, কী ভাবে

হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর বিজ্ঞানীদের মতে, কম ক্যালোরির সুষম খাবার ও পরিমিত ব্যায়ামের সঙ্গে দিনে কম করে ৩–৪ কাপ বা ৭২০–৯০০ মিলি–র মতো কফি খেলে সব দিক বজায় থাকে৷ যাঁরা পেশিবহুল সুঠাম শরীর চান, প্রচুর ব্যায়াম করেন, তাঁরা আরও বেশি খেতে পারেন, যদি সহ্য হয়৷ কখন, কী ভাবে খাওয়া যেতে পারে দেখে নিন–––

• সকাল–দুপুর ও রাত্রে খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে খান৷ কম খাবারে পেট ভরবে৷

• খাবার খাওয়ার পর খেলে চর্বি কম জমবে শরীরে৷

• ক্লান্ত লাগলে খান৷ চনমনে হওয়ার পাশাপাশি বাড়বে ক্যালোরি খরচ৷

• ব্যায়াম করার আগে খাবেন৷ মধ্যপথেও অনেকে খান৷ ব্যায়ামের পরেও খেতে পারেন৷

“তবে আর যাই করুন, বেশি উপকারের আশায় বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ক্যাফেইন সাপ্লিমেন্ট খাবেন না৷ মাত্রা রাখতে না পারলে তা থেকে নানান বিপদ হতে পারে”, জানালেন সব্যসাচী৷

ক্যাফেইন সাপ্লিমেন্টের বিপদ

২০১৮ সালে নিউট্রিয়েন্ট ম্যাগাজিনের স্টাডি থেকে উঠে আসে এক মারাত্মক তথ্য৷ জানা যায়, গত ৫০ বছরে ক্যাফেইনের বিষক্রিয়ায় ৯১ জনের মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে৷ আসল সংখ্যাটা এর চেয়ে অনেক বেশি, বলাই বাহুল্য৷ কারণ, আজকের প্রজন্ম পেশিবহুল শরীর বানানোর জন্য ফ্যাট বার্নার, এনার্জি ড্রিঙ্ক, এনার্জি শেক বা বার খাচ্ছেন দেদার৷ তাতে বিপদের আশঙ্কা প্রতি পদে৷ কারণ, অধিকাংশ সময়েই এ সবে খুব বেশি মাত্রায় ক্যাফেইন থাকে৷ যা অনেক বেশি খেয়ে নিলে অতিরিক্ত ক্যাফেইনের প্রভাবে হার্ট ও শিরা–ধমনির উপর প্রবল চাপ পড়ে, যা থেকে কখনও জ্ঞান হারান মানুষ, কখনও হার্ট বন্ধ হয়ে মারাও যান৷

এই বিপদ ঠেকাতে চাইলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া সাপ্লিমেন্ট নেওয়া বন্ধ করুন৷ সবচেয়ে ভাল হয়, কফি বা সাধারণ এনার্জি ড্রিঙ্ক খেলে৷ কারণ, এতে ক্যাফেইন নিরাপদ মাত্রায় থাকে৷ অনেকটা খেয়ে নিলেও খুব অল্প সময়ের মধ্যে তাকে বিপজ্জনক সীমায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না৷ তার আগেই বমি হয়ে যায়৷

আরও পড়ুন :কোভিডের নতুন স্ট্রেন ধরা পড়ার মতো কিট কি এ দেশে আছে?

আরও পড়ুন :বন্ধু বাইপ্যাপ

Coffee Caffeine Health Wellness Calorie Weight Diet
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy