Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus in West Bengal

গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যু, টানা বাড়ছে সুস্থতাও 

গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৬৫ জন। রাজ্যে এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার ৭.৩১ শতাংশ।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:৪২
Share: Save:

সুস্থতার হার বৃদ্ধিতে টানা স্বস্তির মধ্যেও রাজ্যে করোনায় মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ বেড়েই চলেছে। সোমবার এক দিনে মৃত্যুর সংখ্যা ছাপিয়ে গেল সব নজির। গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২ জনের করোনায় মৃত্যু হয়েছে। নতুন সংক্রমিতের সংখ্যা কিছুটা কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে টেস্টের সংখ্যাও। ফলে, বেড়েছে সংক্রমণের হার।

গত কয়েক দিন ধরেই রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় নতুন করোনা আক্রান্তের সংখ্যা কমছে। সোমবারও সেই প্রবণতা দেখা গেল। সোমবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড আক্রান্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৬৫ জন। রবিবার এই সংখ্যা ছিল ৩ হাজার ১৭৭, শনিবার ৩ হাজার ১৮৮, শুক্রবার ৩ হাজার ১৯২ এবং বৃহস্পতিবার ৩ হাজার ১৯৭। খুব সামান্য হলেও প্রতিদিন রোগীর সংখ্যা কম হওয়ার এই প্রবণতা কিছুটা স্বস্তিতে রাখছে রাজ্য প্রশাসনকে। চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরাও কিছুটা আশাবাদী। যদিও এটাই যে চূড়ান্ত প্রবণতা, এমনটা মনে করার কারণ নেই বলেও সাবধান করে দিচ্ছেন তাঁরা। এই নিয়ে রাজ্যে মোট কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা হল ২ লক্ষ ২৮ হাজার ৩০২।

আক্রান্তের সংখ্যায় বিরাট দুশ্চিন্তার কিছু না থাকলেও রাজ্যের স্বাস্থ্যকর্তাদের কপালের ভাঁজ চওড়া করছে মৃতের সংখ্যা। সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ৬২ জনের মৃত্যুই এখনও পর্যন্ত রাজ্যে সর্বোচ্চ। রবিবার মৃত্যু হয়েছিল ৬১ জনের। শনিবার এই সংখ্যা ছিল ৫৬। সোমবারের ৬২ জন নিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোভিডের বলি হয়েছেন ৪ হাজার ৪২১ জন। রাজ্যের মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে কলকাতায়— ১৯ জনের। উত্তর ২৪ পরগনায় মারা গিয়েছেন ৭ জন। হাওড়াতেও মৃতের সংখ্যা ৭।

আরও পড়ুন: ‘কালো রবিবার’, কৃষি বিলের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দিয়ে বললেন মমতা

সুস্থতার হারে ক্রমাগত বৃদ্ধি করোনা জয়ের আশা বাড়াচ্ছে রাজ্য সরকারের। রবিবারের বুলেটিন অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেছেন ৩ হাজার ১১ জন কোভিড রোগী। এই নিয়ে রাজ্যে মোট সুস্থ হয়ে ওঠা কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লক্ষ ৯৮ হাজার ৯৮৩। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় কোভিড আক্রান্ত রোগী রয়েছেন ২৪ হাজার ৮৯৮ জন। সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে সুস্থতার হার ৮৬.১৬ শতাংশ। রবিবার এই হার ছিল ৮৬.০৫ শতাংশ।

সোমবারের বুলেটিন কিছুটা উদ্বেগ বাড়িয়েছে সংক্রমণের হার ফের বৃদ্ধি পাওয়া নিয়ে। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। রবিবার এই হার ৬ শতাংশের নীচে নামলেও এ দিন বেশ খানিকটা উঠে ফের ৭-এর ঘরে পৌঁছে গিয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ৪৩ হাজার ৩১৩ জন মানুষের কোভিড টেস্ট হয়েছে। তাতে রাজ্যে এই মুহূর্তে সংক্রমণের হার ৭.৩১ শতাংশ। রবিবার এই হার ছিল ৬.৯৬ শতাংশ। সব মিলিয়ে এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মোট টেস্ট হয়েছে ২৭ লক্ষ ৯০ হাজার ৮৬২ জনের।

আরও পড়ুন: মাইকে আপত্তির শাস্তি! বাড়ি ছেড়ে সপরিবার গাড়িতে ঠাঁই কোভিডযোদ্ধার

প্রতিদিন নোভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যায় বেশ কিছু দিন ধরেই কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা কাছাকাছি থাকছে। কখনও কলকাতায় বেশি, তো পরের দিন উত্তর ২৪ পরগনা ছাপিয়ে যাচ্ছে মহানগরীকে। সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে ২৪ ঘণ্টায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যার নিরিখে শীর্ষে কলকাতা (৫২৮)। দ্বিতীয় স্থানে উত্তর ২৪ পরগনা। কলকাতা লাগোয়া এই জেলায় গত নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৫১৫ জন। তার পর পর্যায়ক্রমে রয়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৯০), হাওড়া (২১০, হুগলি (১৩৪), পশ্চিম মেদিনীপুর (১৪৬), পশ্চিম বর্ধমান (১১৯), পূর্ব মেদিনীপুর (১৭০), নদিয়া (১১১), দার্জিলিং (১২৮)-এর মতো জেলা।

(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।

• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE