Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
Jitendra Tiwari

পুর-পদ ছাড়তেই পার্টি অফিসে হামলা, তাই দলও ছাড়লেন জিতেন্দ্র

জিতেন্দ্রর ক্ষোভ মেটাতে শুক্রবার বৈঠকে ডেকেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু দলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার পর সেই বৈঠকেও আর আসছেন না তিনি।

দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের পরেই তৃণমূল ছাড়ার ঘোষণা জিতেন্দ্র তিওয়ারির। —নিজস্ব চিত্র

দলীয় কার্যালয়ে ভাঙচুরের পরেই তৃণমূল ছাড়ার ঘোষণা জিতেন্দ্র তিওয়ারির। —নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০২০ ১৬:০১
Share: Save:

আসানসোলের পুর প্রশাসকের পদ ছাড়তেই পাণ্ডবেশ্বরে তাঁর বিধায়কের কার্যালয়ে ভাঙচুর। সেই কারণে প্রশাসকের পদ ছাড়ার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই তৃণমূলও ছাড়ার ঘোষণা করলেন জিতেন্দ্র তিওয়ারি। বৃহস্পতিবার প্রথমে পুরসভা কার্যালয়ে প্রশাসকের পদ ছাড়ার ঘোষণা করেন জিতেন্দ্র। তার পর পাণ্ডবেশ্বরে নিজের বাড়িতে গিয়ে বলেন, ‘‘প্রশাসক পদে ইস্তফা দেওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যেই আমার বিধায়ক কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়েছে। তাই তৃণমূল ছাড়তে বাধ্য হলাম। দলের সঙ্গে আমার আর কোনও সম্পর্ক নেই।’’

জিতেন্দ্রর ক্ষোভ মেটাতে উত্তরবঙ্গ থেকেই তাঁকে ফোন করেন মুখ্যমন্ত্রী। ঠিক হয় শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর তাঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন। কিন্তু তার আগের দিনই দল ছাড়লেন জিতেন্দ্র। ফলে সেই বৈঠকেও আর যোগ দিচ্ছেন না বলে জানিয়েছেন তিনি। বলেছেন, ‘‘এক দিকে বৈঠকের জন্য ডাকা হচ্ছে, আবার পার্টি অফিসে হামলা করা হচ্ছে।’’

বৃহস্পতিবার আসানসোল পুরসভার কর্মীদের একটি সভায় প্রশাসকের পদ ছাড়ার ঘোষণা করেন জিতেন্দ্র। পদত্যাগের চিঠি পাঠিয়েছেন নগরোন্নয়ন দফতরের সচিব এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে। তখন থেকই তাঁর দল ছাড়ার জল্পনা তৈরি হয়। তবে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘‘পুরসভায় দলের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ তখনই কার্যত নিশ্চিত হয় তিনি তৃণমূলের সঙ্গেও সম্পর্ক ছিন্ন করতে চলেছেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক। কিন্তু প্রশাসক পদ ছাড়ার পরেই পাণ্ডবেশ্বরে তাঁর বিধায়ক কার্যালয়ে ভাঙচুর চালায় দুষ্কৃতীরা। জিতেন্দ্রর কথায় স্পষ্ট, এই ঘটনা তাঁর দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত আরও তরান্বিত করেছে।

কেন্দ্রের টাকা না নেওয়া নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি দেওয়া ঘিরে জিতেন্দ্র দল এবং পুর প্রশাসকের পদ ছাড়তে পারেন বলে জল্পনা শুরু হয়। তার পর তাঁর ক্ষোভ মেটাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ থেকে ফোনে কথাও বলেন। কিন্তু দলনেত্রীর ফোনেও যে কাজ হয়নি, এ দিন জিতেন্দ্রর ঘোষণাতেই তা স্পষ্ট।

ফিরহাদকে লেখা ওই চিঠিতে কেন্দ্রের স্মার্ট সিটি প্রকল্পে ২০০০ কোটি টাকা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন জিতেন্দ্র। এ ছাড়া কঠিন বর্জ্য নিষ্কাষণ প্রকল্পেও ১৫০০ কোটি না নেওয়ায় রাজ্য নেতৃত্বের উপর ক্ষোভ উগড়ে দেন পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক জিতেন্দ্র। রাজনৈতিক কারণেই ওই টাকা নেওয়া হয়নি এবং তার জন্য আসানসোলের উন্নয়নের ক্ষতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন চিঠিতে।

আরও পড়ুন: অমিত-সফরের আগে মমতাকে চিঠি দিয়ে দলও ছাড়লেন শুভেন্দু

আরও পড়ুন: শুভেন্দুর চিঠির প্রেক্ষিতে মমতাকে ব্যবস্থা নিতে বলে চিঠি ধনখড়ের

এর পর বুধবার পূর্ব বর্ধমানের সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বাড়িতে শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে বৈঠকও হয় তাঁর। যদিও তিনি বলেন, ওই বৈঠকে কোনও রাজনৈতিক আলোচনা হয়নি। অন্য দিকে পুর প্রশাসক এবং দলের সমস্ত পদ ছাড়ার পর এ বার জিতেন্দ্রর বিধায়ক পদ ছাড়া নিয়েও শুরু হয়েছে জল্পনা। যদিও এ বিষয়ে তিনি জানিয়েছেন, এখনই বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিচ্ছেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jitendra Tiwari TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE