মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী মানিক মজুমদার।
প্রয়াত হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গী ও প্রাক্তন আপ্তসহায়ক মানিক মজুমদার। শনিবার সকালে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে মারা গিয়েছেন তিনি। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। মানিকের মৃত্যুসংবাদ পাওয়া মাত্রই দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সঙ্গীর আত্মার শান্তিকামনায় টুইট করেন মমতা। টুইটে তিনি লেখেন, ‘আমার চার দশকেরও বেশি সময়ের বন্ধুপ্রতিম মানিক (দা) মজুমদারকে হারিয়ে আমি শোকাহত। তিনি আমার কালীঘাটের অফিসে সামলাতেন হাসিমুখে। নীরবে ও নিঃশব্দে কাজ করে গিয়েছেন। শোকাতুর হৃদয়ে আমরা তাঁকে স্মরণে রাখব’।
সম্প্রতি করোনায় আক্রান্ত হয়ে বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন মানিক। ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ হয় তাঁর। তার পরেই তাঁকে ভর্তি করানো হয় বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে। কিন্তু চিকিত্সকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে শনিবার প্রয়াত হন তিনি। তাঁর মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তৃণমূলের নেতা-কর্মী মহলে। রাজ্য থেকে জেলা— সমস্ত দলীয় কর্মসূচি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে তৃণমূল ভবনের দৈনিক সাংবাদিক বৈঠকও। দলীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শীর্ষনেতৃত্বের তরফে।
১৯৮০ সাল থেকে মানিক মজুমদারের সম্পর্ক বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের। অকৃতদার মানিক থাকতেন দক্ষিণ কলকাতার কালীঘাট এলাকাতেই। ১৯৮৪ সালে মমতা যখন সিপিএমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়কে হারিয়ে প্রথম সাংসদ হন, তখনও তাঁর পাশেই ছিলেন মানিক। সেই সময় থেকেই মমতার কালীঘাটের অফিসের দেখভালের দায়িত্ব নিয়েছিলেন তিনি। এমন সম্ভবত একটি দিনও যায়নি, যেদিন মানিক সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ওই দফতরে থাকেননি। বস্তুত, মমতার ছোট্ট অফিসঘরে না-এলে তাঁর দিন ভাল যেত না বলেই ঘনিষ্ঠদের বলতেন এই রাজনৈতিক কর্মী। ২০০৪ সালে যখন মমতা একা ছাড়া তৃণমূলের কোনও সাংসদ লোকসভা ভোটে জেতেননি, তখনও সেই কঠিন সময়ে মমতার পাশেই ছিলেন তাঁর রাজনৈতিক আপ্তসহায়ক। নিপুণ এবং দক্ষ হাতে সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতার বাড়ির লাগোয়া দফতরটি সামলাতেন মানিক। সমস্ত টেলিফোন ধরতেন। দর্শনার্থী সামলাতেন। কেউ কখনও রাগতে দেখেনি তাঁকে। করোনা সংক্রমণ শুরুর পর থেকে অবশ্য মানিক আর ওই দফতরে যাতায়াত করতেন না। বাড়িতেই থাকতেন।
I am deeply saddened and pained to have lost a dearest colleague of over four decades, Manik (da) Majumdar. His ever-smiling face at my office in Kalighat, where he worked diligently and quietly, will be deeply missed by us all.
— Mamata Banerjee (@MamataOfficial) January 2, 2021
আরও পড়ুন: বঙ্গে কত আসন পেতে পারে পদ্ম? অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা করেছে বিজেপি
আরও পড়ুন: দেশ জুড়েই করোনা যোদ্ধাদের বিনামূল্যে টিকা: কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী
মমতার সঙ্গে মানিকের প্রায় চার দশকের রাজনৈতিক সম্পর্ক শেষ হয়ে গেল শনিবার। মানিকের প্রয়াণে ভেঙে পড়েছেন সাতগাছিয়ার বিধায়ক তথা রাজ্য বিধানসভার প্রাক্তন ডেপুটি স্পিকার সোনালী গুহ। তিনি বলেন, ‘‘দিদির সবচেয়ে বিশ্বস্ত সৈনিক ছিলেন মানিক’দা। দিদি যেখানেই যান, যত রাতেই বাড়ি ফিরুন না, দিদি বাড়িতে না ঢুকলে কখনও কালীঘাটের অফিস ছেড়ে বাড়ি যেতেন না। অপেক্ষা করতেন গভীর রাত পর্যন্ত। আমার কাছে আমার বড় দাদার মতো ছিলেন উনি। ভাবতে পারছি না, কালীঘাটে গেলে আর মানিকদার সঙ্গে দেখা হবে না!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy