Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Jetty

জেটি ভেঙে লঞ্চ বন্ধ তিন মাস, দুর্ভোগ

গত দু’বছরে এই নিয়ে বানের ধাক্কায় সেটি সেটি দু’বার ভেঙে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেটির গ্যাংওয়ে।

বন্ধ শিবপুর লঞ্চঘাটের জেটি। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

বন্ধ শিবপুর লঞ্চঘাটের জেটি। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার

দেবাশিস দাশ
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০২০ ০৩:২৭
Share: Save:

গঙ্গায় আসা কোটালের বানের ধাক্কায় বারবার ভেঙে পড়ছে শিবপুর লঞ্চঘাটের জেটি। এক বার ভেঙে পড়লে সেই জেটি সারাতে খরচ হচ্ছে কয়েক কোটি টাকা। সময়ও লাগছে মাসের পর মাস। গত ১১ মার্চ বানের ধাক্কায় ফের জেটিটি ভেঙে পড়ে। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেলেও সেটি এখনও সারানো হয়নি। বন্ধ রয়েছে যাত্রী পরিষেবা। লঞ্চ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন কয়েক হাজার যাত্রী। করোনার এই সময়ে রাস্তায় যানবাহন এমনিতেই কম। বিকল্প হিসেবে জলপথ ব্যবহার করতে চাইলেও পারছেন না তাঁরা। স্থায়ী সমস্যা সমাধানের জন্য ওই ঘাটে বিশেষজ্ঞেরা কংক্রিটের জেটি তৈরির প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাবও এখনও বাস্তবায়িত হয়নি।

জলপথ ব্যবহার করে নবান্নে পৌঁছনোর জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে বছর তিনেক আগে প্রায় ১০ কোটি টাকা খরচ করে তৈরি হয়েছিল শিবপুর লঞ্চঘাটের জেটি। গত দু’বছরে এই নিয়ে বানের ধাক্কায় সেটি সেটি দু’বার ভেঙে পড়ে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় জেটির গ্যাংওয়ে।

বাবুঘাট যাতায়াতের জন্য শিবপুর ঘাট দিয়ে লঞ্চ চালায় একমাত্র হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতি। অর্থসঙ্কটে চলা ওই সমিতির ঘাটটি থেকে মাসে আয় হয় প্রায় ৪২-৪৩ হাজার টাকা। কিন্তু গত তিন মাস যাত্রী পরিষেবা বন্ধ থাকায় আয়ের পথও বন্ধ। সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, লঞ্চঘাটের ভেঙে পড়া গ্যাংওয়ে মেরামত করছে পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগম। কিন্তু বারবার কাজ শেষ করার আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি।

সমিতির অন্যতম প্রশাসক আমারুল হিলাল বলেন, ‘‘আমি যত দূর জানি, গ্যাংওয়ে মেরামতির কাজ হয়ে গিয়েছে অনেক দিন আগে। এখন শুধু গ্যাংওয়েটি এনে পন্টুনের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার কাজ বাকি। সেটা না- হওয়ায় পরিষেবা শুরু করা যাচ্ছে না। মাসের পর মাস আমাদের আর্থিক ক্ষতি বইতে হচ্ছে। ওঁরা জানিয়েছেন, শীঘ্রই কাজ শেষ হবে।’’

বার বার এমন বিপর্যয় ঘটায় শুধু হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতিই নয়, রুজি হারিয়েছেন স্থানীয় দোকানদার দেবু মাইতি, সাইকেল স্ট্যান্ডের মালিক সমর কর্মকারেরা। লকডাউনে সরকারি রেশন ও ত্রাণের উপরে নির্ভর করে সংসার চালাচ্ছেন তাঁরা।

বার বার এ ভাবে বানের ধাক্কায় জেটি ভাঙছে কেন?

রাজ্য ভূতল পরিবহণ নিগমের বিশেষজ্ঞদের মতে, এর কারণ গঙ্গার ঢেউয়ের গতিপথ বদলে যাওয়া। জোরালো বান আসার সময়ে গঙ্গার ধারে কংক্রিটের বোল্ডারে ধাক্কা মেরে ঢেউ আছড়ে পড়ছে জেটির উপরে। ফেরার সময়েও সেটি একই মাত্রায় ফের জেটিতে ধাক্কা দিচ্ছে। সেই ধাক্কা সামলাতে না-পেরেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জেটি।

পশ্চিমবঙ্গ ভূতল পরিবহণ নিগমের চিফ ইঞ্জিনিয়ার অরূপ দত্তও মেনে নিয়েছেন, শিবপুর লঞ্চঘাটে কংক্রিটের জেটির প্রয়োজন আছে। তিনি বলেন, ‘‘একাধিক বার এমন ঘটনা ঘটায় ওই জায়গায় কংক্রিটের জেটি তৈরির চিন্তাভাবনা হচ্ছে। তবে কাজটি যে হেতু খরচসাপেক্ষ, তাই আপাতত জেটি মেরামত করে ১০-১৫ দিনের মধ্যে চালু করে দেওয়া হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jetty Launch Service Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE