Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Durga Puja 2020

পুজোর আয়োজন কী ভাবে, খোঁজ নিচ্ছে লালবাজার

পুজো করা নিয়ে কী ভাবে এগোতে চাইছেন উদ্যোক্তারা, তা জানতে গত সপ্তাহেই ওই নির্দেশ দিয়েছিল লালবাজার।

ছবি পিটিআই।

ছবি পিটিআই।

শিবাজী দে সরকার
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:১৯
Share: Save:

দুর্গাপুজোর বাকি আর মাত্র দেড় মাস। কিন্তু এ বছর কোভিড অতিমারি পরিস্থিতিতে পুজো করা হলে তা কী ভাবে হবে, সে নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকারি তরফে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তা বলে অবশ্য হাত গুটিয়ে বসে নেই পুজো উদ্যোক্তারা। ইতিমধ্যেই তাঁরা প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। এই অবস্থায় উদ্যোক্তারা কী ভাবে পুজোর আয়োজন করতে চাইছেন, তা জানতে ডিভিশনাল ডেপুটি কমিশনারদের নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। যার ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই এলাকার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে কথা বলে তাদের পুজোর প্রস্তুতি সংক্রান্ত রিপোর্ট জমা দিয়েছেন থানার আধিকারিকেরা।

পুজো করা নিয়ে কী ভাবে এগোতে চাইছেন উদ্যোক্তারা, তা জানতে গত সপ্তাহেই ওই নির্দেশ দিয়েছিল লালবাজার। তার পরেই এলাকার পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের পরিকল্পনা জেনে নিয়েছে বেশির ভাগ থানাই। এর পরে সেই রিপোর্ট ডেপুটি কমিশনারদের মাধ্যমে পৌঁছে গিয়েছে লালবাজারে।

সোমবার লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘ডিসিদের বলা হয়েছিল পুজোর প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে। গত সপ্তাহে সেই মতো থানার অধিকারিকেরা নিজেদের এলাকার বড় পুজোগুলির কর্তাদের ফোন করে বা দেখা করে পুজোর প্রস্তুতি সম্পর্কে খোঁজ নিয়েছেন। ফলে শেষ মুহূর্তে প্রশাসন পুজোর অনুমতি দিলে আমাদের প্রস্তুতি বা বাহিনী মোতায়েন করা নিয়ে কোনও অসুবিধা হবে না।’’ এর আগে পুজোর সময় গাড়ি রাখতে যাতে কোনও অসুবিধে না হয়, সে জন্য ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে নিজের এলাকার পার্কিং ব্যবস্থা নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছিল লালবাজার।

পুলিশ সূত্রের খবর, প্রতি বছর পুজোর বেশ কয়েক মাস আগেই, সাধারণত জুন-জুলাইয়ে এই কাজ করা হয়ে থাকে। কিন্তু এ বার করোনার কারণে সেই কাজ পিছিয়ে গিয়েছে। আনলক-৪ পর্বেও সরকারি তরফে পুজো নিয়ে সে ভাবে কিছু বলা হয়নি। ফলে পুজো হবে কি না, তা নিয়ে এখনও অন্ধকারে পুলিশ। তবে এর মধ্যে কেউ পুজোমণ্ডপ তৈরি চাইলে তাদের বাধা দেওয়া হবে না বলেই দাবি পুলিশের একাংশের। সেই মতো একাধিক বড় পুজো কমিটি ইতিমধ্যেই তাদের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।

দক্ষিণ কলকাতার একটি থানার ওসি বলেন, ‘‘বেশির ভাগ পুজো কমিটি খরচ কমিয়ে ছোট করে এ বারের পুজো সারতে চাইছেন। আবার আমার এলাকার অনেক পুজো কমিটি ধর্মীয় আচার মেনে জাঁকজমকহীন পুজো করবেন বলে জানিয়েছেন।’’ উত্তর এবং দক্ষিণ শহরতলির

একাধিক পুলিশ অধিরকারিকও তাঁদের এলাকার পুজোর প্রস্তুতি নিয়ে একই ধরনের কথা জানিয়েছেন। তবে ‘প্রভাবশালী’দের পুজোর কী হবে, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি কোন পুলিশ কর্তা।

করোনার কারণে গত মার্চ থেকে কোনও উৎসব অনুষ্ঠানই জাঁকজমক করে পালন করার অনুমতি দেয়নি প্রশাসন। বাংলা নববর্ষ থেকে শুরু করে ইদ বা মহরম — সবেতেই একই ছবি। শীর্ষ আদালতের নির্দেশে পুরীর রথযাত্রা পালিত হয়েছে নিয়ন্ত্রিত ভাবে। মহরমেও মিছিলের অনুমতি দেয়নি শীর্ষ আদালত। তা সত্ত্বেও সংক্রমণ বাড়ছে দ্রুত। এই মুহূর্তে দেশে এক দিনে ৯০ হাজার মানুষ সংক্রমিত হচ্ছেন। ফলে এই পরিস্থিতিতে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব আদৌ পালিত হবে কি না, তা নিয়ে আশঙ্কায় রয়েছে পুলিশের একটি বড় অংশ।

যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কয়েক দিন আগে বলেছেন, ‘‘পুজোটা ভাল করে করতে হবে তো! পুজো করতে গেলে পাড়া ভাল রাখতে হবে।’’ ফলে পুলিশকর্তারা মনে করছেন, চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে পুজোর অনুমতি দিয়ে দিতে পারে রাজ্য সরকার। আর সে ক্ষেত্রে

নির্বিঘ্নে পুজো উতরে দিতে যাতে বাহিনী প্রস্তুত থাকতে পারে, সে জন্যই আগে থেকে পুজো কমিটিগুলির পরিকল্পনা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে চাইছে লালবাজার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja 2020 Coronavirus in West Bengal Lalbazar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE