লড়াকু: বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালে হেমন্ত সুব্বা। নিজস্ব চিত্র
ছোট ঘা থেকে প্রায় গোটা হাতেই পচন ধরেছিল। যন্ত্রণায় ছটফট করা বছর ছাপান্নর রোগী নিজেই এক এক সময়ে বলতেন, ‘‘আর সহ্য করতে পারছি না। হাত কেটে বাদ দিন।’’ হাতের চামড়া প্রতিস্থাপন করে, টানা ৯২ দিন বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালের চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন উত্তরবঙ্গের ওই বাসিন্দা।
জলপাইগুড়ির বাসিন্দা হেমন্ত সুব্বা দীর্ঘদিন ধরেই ডায়াবিটিসে আক্রান্ত। গত ফেব্রুয়ারিতে তাঁর বাঁ হাতের আঙুলে ঘা হয়। সেটিই ক্রমশ ছড়িয়ে গোটা হাতে পচন ধরে যায়। হেমন্তের স্ত্রী শর্মিলাদেবী বলেন, ‘‘প্রথমে স্বামীকে শিলিগুড়ি সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখান থেকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে চিকিৎসা করেও কিছু হয়নি। পচন বাড়তে থাকে।’’ অগত্যা হেমন্তকে স্থানান্তরিত করা হয় এসএসকেএমে। গত ১০ মার্চ কলকাতায় আসেন তাঁরা।
হেমন্ত বলেন, ‘‘সারা দিন ঘুরেও বেড মিলল না পিজিতে। হাতের যন্ত্রণাও বাড়ছিল। শেষে এক পরিচিতের থেকে বেলুড় শ্রমজীবী হাসপাতালের খোঁজ পাই।’’ ওই দিনই সেখানে ভর্তি হন হেমন্ত। লকডাউনের মধ্যেই তাঁর হাতের চামড়া প্রতিস্থাপন করা হয়। বেলুড় শ্রমজীবী স্বাস্থ্য প্রকল্প সমিতির সম্পাদক ও চিকিৎসক অনিল সাহা বলেন, ‘‘একে ডায়াবেটিক রোগী, তাই ঘা শুকিয়ে তার পরে চামড়া প্রতিস্থাপনে মারাত্মক ঝুঁকি ছিল। শরীরে সেপ্টিসেমিয়া হওয়ারও আশঙ্কা ছিল।’’
হাতের বাকি অংশ সেরে গেলেও আঙুলগুলিতে পরে আরও এক বার অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন রয়েছে বলেই জানান চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার হেমন্ত বলেন, ‘‘হাতটা কেটে ফেলতে হবে ভেবেছিলাম। সেখানে আজ হাত পুরো ঠিক। এ বার আঙুলগুলিও সেরে যাবে আশা করছি।’’ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের শ্রীরামপুর শাখাটিকে রাজ্য সরকার কোভিড হাসপাতাল ঘোষণা করে। ফলে লকডাউনের মধ্যেই বসিরহাট, বর্ধমান, হাসনাবাদ থেকে আসা রোগীদের জরুরি অস্ত্রোপচার হয়েছে বেলুড়ের ওই হাসপাতালে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy