মিছিলে মার্ক উডওয়ার্ড। নিজস্ব চিত্র
পাক ধরেছে চুলে। গায়ে কালো সোয়েটার। নয়া নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় রবিবার ধর্মতলায় সমাবেশে অনেকেরই নজর কেড়েছিলেন ওই বিদেশি। মিছিলে দাঁড়িয়ে আমেরিকার অ্যারিজোনা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মার্ক উডওয়ার্ড বলছেন, ‘‘মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দু’জনকে একই আসনে রাখা যাবে। দুর্নীতির দায়ে আমাদের প্রেসিডেন্টকে মার্কিন কংগ্রেসের নিম্ন কক্ষ হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসে ইমপিচ করা হয়েছে। গণতন্ত্রবিরোধী নাগরিকত্ব আইন সংসদে পাশ করানোয় সারা বিশ্বে সমালোচিত হচ্ছেন মোদীও। ট্রাম্পের মতো মোদীকেও ক্ষমতাচ্যুত করার প্রয়োজন রয়েছে।’’
রবিবার দুপুরে ধর্মতলার ডোরিনা ক্রসিংয়ে জমিয়তে উলেমায়ে হিন্দের ডাকা নাগরিকত্ব আইন বিরোধী সমাবেশে তখন ভিড় উপচে পড়েছে। জাতীয় পতাকা, পোস্টার হাতে স্লোগান দিচ্ছেন একদল তরুণী। আর মোবাইলে তাঁদেরই ছবি তুলছেন মার্ক। কলকাতার বিভিন্ন কলেজের ছাত্রীরা কেন নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতা করছেন, মার্ক তা-ই জেনে নিচ্ছিলেন মিছিলে আসা ওই তরুণীদের কাছ থেকে। কিন্তু তিনি এই মিছিলে কেন? মার্ক বলছেন, ‘‘হোটেলে উঠেছি দিন দুয়েক আগে। হাঁটতে হাঁটতে ধর্মতলায় এসে পৌঁছেই দেখি এই ভিড়। তার পর থেকে এখানে রয়েছি।’’
ধর্ম, ইসলাম, বিভিন্ন দেশের রাজনীতি এবং সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং ধর্মতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক মার্ক। সপ্তাহ খানেক আগে ভারতে এসেছিলেন ছুটি কাটাতে। কিন্তু দেশ জুড়ে বিক্ষোভের জেরে বেশ কিছু জায়গা ঘুরে দেখার পরিকল্পনা বাতিল করতে হয়েছে তাঁকে। অবশেষে দিন দুয়েক আগে পৌঁছন কলকাতায়। বলছেন, ‘‘ভারতের মতো শান্তিপূর্ণ দেশে এত বড় আন্দোলন আগে দেখিনি। ন্যায্য দাবিতেই এই আন্দোলন হচ্ছে বলে মনে করি।’’
আরও পড়ুন: ভবিষ্যতের হাত ধরেই নমাজে হাজির দৃষ্টিহীন
প্রৌঢ় মার্কের মতে, যে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্টের প্রথম বছরের তুলনায় বর্তমান প্রেসিডেন্টের প্রথম বছর মানুষের কাছে কম গ্রহণযোগ্য বলে মনে হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘‘শুধু ভুয়ো প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেন ট্রাম্প। একাধিক বিষয়ে ট্রাম্প তাঁর জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারেননি। ট্রাম্পের মতো একই প্রকৃতির কাজ করেছেন মোদীও। এই আন্দোলনই বলে দিচ্ছে, এ দেশের মানুষ তাঁর উপরে কতটা বিরক্ত।’’
আরও পড়ুন: নাগরিকত্বের কাঁটা উৎসবের অ্যাংলো পাড়ায়
কোনও বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়কে আলাদা করে দিতে নতুন করে আইন তৈরি করা গণতন্ত্রের পরিপন্থী বলে মনে করেন মার্ক। তাই ভারতের মতো সার্বভৌম রাষ্ট্রের ঐক্য বজায় রাখতে নাগরিকত্ব আইন বাতিলের পক্ষেই সওয়াল করছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ওই অধ্যাপক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy