Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

ট্রাম্প-তালিবান বৈঠক বাতিল, স্বস্তির নিশ্বাস দিল্লির

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে মোদী সরকারের সামনে উপত্যকায় শান্তি বজায় রাখাটা এই মুহূর্তে বিশেষ চ্যালেঞ্জ।

ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ডোনাল্ড ট্রাম্প।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:৪৮
Share: Save:

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তালিবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা বাতিল করে দেওয়ার পর কিছুটা দম ছাড়ার ফুরসত পেল দিল্লি।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহারের পরে মোদী সরকারের সামনে উপত্যকায় শান্তি বজায় রাখাটা এই মুহূর্তে বিশেষ চ্যালেঞ্জ। কাবুল-আলোচনার গুরুত্ব আপাতত কমে যাওয়ায়, পাকিস্তান সরকারের সামনেও দক্ষিণ এশিয়ার জলঘোলা করে কাশ্মীরকে অশান্ত করার সুযোগ কমল বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। সাউথ ব্লকের দাবি, তালিবানের সঙ্গে শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার অর্থ, অক্টোবরে পরিকল্পনা মাফিক কাবুল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারও হচ্ছে না। সেনা ফেরানো হলে, দু’টি বিষয় একই সঙ্গে ঘটত বলে মনে করা হচ্ছিল। প্রথমত, আফগানিস্তানে ফের সোভিয়েত পরবর্তী গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হত। তালিবানের সঙ্গে নির্বাচিত সরকারের রক্তাক্ত যুদ্ধ বেধে যেত। দ্বিতীয়ত এই ডামাডোল শুরু হলে পাকিস্তানের পক্ষেও জিহাদিদের কাশ্মীরে ঠেলে দিয়ে উপত্যকাকে অস্থির করে তোলা সুবিধা হত। এখনও সে আশঙ্কা যে নেই এমন নয়, তবে অন্তত রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ অধিবেশন পর্যন্ত তালিবানের সঙ্গে মার্কিন আলোচনা বা কাবুল থেকে মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের মতো ঘটনা ঘটবে না বলেই মনে করছে দিল্লি।

জুলাইয়ে হোয়াইট হাউসে পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্পের বৈঠকের পরই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল, দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার রণনীতিতে দিল্লিকে ছাপিয়ে ইসলামাবাদকে গুরুত্ব দিচ্ছে তারা। এমনিতেই পাক সেনাদের সঙ্গে মার্কিন প্রশাসনের সম্পর্ক পুরনো এবং গভীর। সামরিক-বাণিজ্য ক্ষেত্রে পাকিস্তান অনেকটাই নির্ভরশীল ওয়াশিংটনের উপর এবং উল্টো দিকে পাকিস্তানকে সামনে রেখে দক্ষিণ এশিয়ায় বাণিজ্য এবং অস্ত্র বিক্রির বিষয়টিও আমেরিকার কাছে যথেষ্ট লাভজনক হতে পারে। পাশাপাশি আফগানিস্তানের সঙ্গে আলোচনা এবং শান্তি প্রক্রিয়ার প্রশ্নে সম্প্রতি ভারত যে একেবারেই মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিল, সেটাও স্পষ্ট হয়ে উঠছিল ক্রমশ। চিন, পাকিস্তান এবং আমেরিকা নিজেদের মতো করে আফগান-সমাধান নিয়ে আলোচনা করেছে গত তিন মাস, সেখানে দিল্লিকে কোথাও ডাকা হয়নি। এটাও ঠিক যে গত ১৮ বছরে ভারতের কোনও সরকারই তালিবানকে বৈধ অংশীদার মেনে তাদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলার চেষ্টা করেনি। পাকিস্তান ইত্যবসরে তালিবানকে কেন্দ্রে রেখে আফগানিস্তানে শান্তির মোড়ক দেওয়ার প্রয়াস করে গিয়েছে। সে কাজে আমেরিকাকেও পেয়েছে তারা।

ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরে ওয়াশিংটনের কাছে থেকে যে বাড়তি গুরুত্ব ইমরান সরকার আদায় করতে পেরেছিল, তা কিছুটা লঘু হবে বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। অক্টোবরেই আন্তর্জাতিক আর্থিক নজরদারি সংস্থার বৈঠকে কালো তালিকায় অন্তর্ভুক্তির খাঁড়া ঝুলছে পাকিস্তানের উপর। আফগানিস্তান-আলোচনা বন্ধ হওয়ায় পশ্চিমের দেশগুলির ইসলামাবাদকে বাঁচানোর কতটা উৎসাহ থাকবে, সেটাও এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Donald Trump Taliban Peace Talks
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE