এসএসকেএম হাসপাতালে বসিরুল সরকার। নিজস্ব চিত্র।
অল্পের জন্যে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন মুর্শিদাবাদের বসিরুল সরকার ওরফে টিপু। কয়েক মিনিটের হের ফের হলেই জঙ্গিরা তাঁকেও তুলে নিয়ে যেত। ওই সময় মালিকের বা়ড়িতে ভাত আনতে গিয়েছিলেন তিনি। ডেরায় ফিরে দেখেন সহকর্মীরা নেই। রাস্তায় বেরতে স্থানীয় এক দোকানদার তাঁকে বলেন, “ভাগো ইহা সে... ভাগো!”
কেন তাঁকে এ কথা বলছেন ওই দোকানদার! কিছু বুঝে ওঠার আগেই একের পর এক গুলির আওয়াজ। কিছু ক্ষণ যাঁদের সঙ্গে বসিরুল আপেলবাগানে হাসিঠাট্টা, গল্প-গুজব করেছিলেন, কয়েক ঘণ্টা পর তাঁদের রক্তাক্ত দেহ দেখে আঁতকে উঠেছিলেন টিপু।
এই ঘটনা মন থেকে কিছুতেই মুছে ফেলতে পারছেন না বসিরুল। রুজিরুটির জন্যে প্রতি বছরই কাশ্মীরে আপেলবাগানে কাজ করতে যেতেন। কিন্তু এ বছর এমন অভিজ্ঞতা হবে— তা স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি। বুধবার রাতে কলকাতায় ফিরতেই তাঁকে বিমানবন্দর থেকে সোজা এসএসকেএম হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটে ভর্তি করা হয়। তাঁর অভিজ্ঞতার কথা চিকিৎসকদেরও জানিয়েছেন বসিরুল।
দেহে কোনও আঘাত না লাগলেও মনে ক্ষত যে গভীর হয়েছে, বসিরুলের কথাবার্তা শুনেই তা বুঝতে পেরেছিলেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসকেরা জানান, বসিরুলকে ইনস্টিটিউট অব সাইক্রাইটিক্স-এ রেখে আরও কিছু দিন চিকিৎসার প্রয়োজন রয়েছে। কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই বাড়ি ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছিলেন বসিরুল। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই টানাপড়েনের মধ্যে তাঁকে এক প্রকার ছেড়ে দিতে বাধ্য হন চিকিৎসকেরা। বিকেলে শারীরিক পরীক্ষার পর পরিবারের দুই সদস্য তাঁকে নিয়ে মুর্শিদাবাদের বাহালনগরের উদ্দেশে রওনা দেন।
চিকিৎসক মুর্তাজা আহমেদ বাটের ব্যক্তিগত আপেল-বাগিচাতেই কাজ করতেন বসিরুলরা। মুর্তাজার বাড়িতে রাতের খাবার আনতে গিয়েছিলেন তিনি। কুলগামের কাতরাসুর ডেরায় আরও ৬ সঙ্গীর সঙ্গে থাকতেন বসিরুল। এই ঘটনার পর কুলগামের পথে আর পা মাড়াবেন না বলেই জানিয়েছেন বসিরুল।
আরও পড়ুন: হাঁড়ি চড়ল না বাহালনগরে, পূর্ব পরিকল্পিত খুন বলে কেন্দ্রের ঘাড়ে দোষ চাপালেন মমতা
আরও পড়ুন: প্রয়াত প্রাক্তন সিপিআই সাংসদ গুরুদাশগুপ্ত, শোকবার্তা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রীর
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy